ধারাবাহিক ভ্রাম্যমান কনস্যুলার সেবার অংশ হিসেবে মালদ্বীপের থিনাধু আইল্যান্ডে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দিয়েছে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন।
শুক্র ও শনিবার দুইদিনব্যাপী এই এই ভ্রাম্যমান সেবা নিয়েছেন থিনাধু আইল্যান্ড ও এর পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলোতে কর্মরত প্রায় দু’হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি। আইল্যান্ডটির সিটি কাউন্সিলের সহযোগিতায় স্থানীয় একটি স্কুলের হলরুমে এই সেবা দেয়া হয়।
রাজধানী মালে থেকে প্রায় ৪৬৫ কিলোমিটার দূরে গাফ ঢাল এটল-এর অধীনে মালদ্বীপের থিনাধু আইল্যান্ডটি অবস্থিত। দ্বীপটিতে কোনো বিমান বন্দর না থাকায়, বিমান যোগে পার্শ্ববর্তী কাধিদু বিমান বন্দরে অবতরণ করে দলটি। এ সময় স্থানীয় সিটি কাউন্সিলের কর্মকর্তারা প্রতিনিধিদলটিকে অর্ভ্যথনা জানান।
পরের দিন সমুদ্র যোগে থিনাধু আইল্যান্ডে পৌছায় মিশনের প্রতিনিধিদল।
আইল্যান্ডটিতে দু’হাজারেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। এই প্রবাসীদের সহজলভ্য ও দ্রুততম সময়ে সার্বিক কনস্যুলার সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দ্বীপটিতে চারদিনের পরিদর্শনে যান বাংলাদেশ মিশনের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল।
যার নেতৃত্বে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো.সোহেল পারভেজ। সফরসঙ্গী হিসেবে সাথে ছিলেন মিশনের তৃতীয় সচিব মো. জিল্লুর রহমান,প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিরিন ফারজানা,কল্যাণ সহকারী আল মামুন পাঠান এবং কনস্যুলার সহকারী এবাদ উল্লাহ।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’দিনব্যাপী চালানো মিশনের এ ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলার সেবা ও কল্যাণ ক্যাম্পে সেবা নিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছুটে আসেন দূর দুরান্ত থেকে। এতে প্রায় দুই হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি ই-পাসপোট, এমআরপি আবেদন পত্র মোবাইল ডিভাইস-এর মাধ্যমে এনরোল করাসহ বিভিন্ন সেবা নিয়েছেন।
এছাড়াও হাইকমিশন তাৎক্ষণিক ই-পাসপোর্ট ও ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের মেম্বারশিপ কার্ড প্রধান করেন ৬০ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে।
এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভারও আয়োজন করেন বাংলাদেশ হাইকমিশন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মো. সোহেল পারভেজ।
এ সময় তিনি উক্ত ক্যাম্পে আগত প্রবাসী বাংলাদেশীদের বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ,ওয়েজআর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য কার্ড গ্রহণ, ই-পাসপোট, স্থানীয় আইন-কানুন, স্বাস্থ-সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও তথ্য প্রদান করেন।
একইসাথে তিনি বলেন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভূমিকা অপরিসীম ও অনস্বীকার্য। দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে প্রবাসীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
এছাড়াও তিনি ভিসা দুর্নীতির সাথে জড়িত দালাল চক্র থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি কোন অবৈধ ব্যবসা ও মাদক সেবীদের সাথে জড়িত না হওয়ার জন্য উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ করেন তিনি। পরে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে খেলাধুলার সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।
ক্যাম্পেইন শেষে আইল্যান্ডটির সিটি কাউন্সিল এর প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক করেন মিশনের প্রতিনিধিদলটি। এসময় দ্বীপটিতে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধকরণ, সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হয়। এসময় সিটি কাউন্সিলের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ মিশনের এই নতুন মাত্রার কনস্যুলার সেবা প্রদান কর্মসূচিকে সাধুবাদ জানিয়ে মিশন কর্মকর্তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান দ্বীপটিতে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৭:৩৬ ৪৪ বার পঠিত