জামালপুর প্রতিনিধি : টানা দু-তিন দিনের ভারি বৃষ্টিতে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কয়েকশ একর আমন ধান ক্ষেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যা কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি করেছে।
ইসলামপুর সদর, কুলকান্দী, পাথর্শী, চিনাডুলী ইউনিয়নসহ পৌরসভার কিছু নিচু এলাকার প্রায় ৫০০ একরেরও বেশি আমন ধান ক্ষেত বর্তমানে পানির নিচে। মাত্র কয়েকদিন আগে রোপণ করা এসব চারা পচে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।
সরেজমিনে পাথর্শী ইউনিয়নের গামারিয়া এলাকার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে শুধু পানি আর পানি।
মুখশিমলা গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, “দুই বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। সার আর ওষুধও দিয়েছি, গাছগুলো সবুজ হয়ে উঠেছে। কিন্তু টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে সব ধান গাছ ডুবে গেছে, পচনও ধরেছে। পানি পারাপারের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় এই অবস্থা। দ্রুত পানি সরানোর ব্যবস্থা না করলে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।”
একই গ্রামের ডবলু মিয়া জানান, “ফসল তো গেছেই, কিস্তি তুলে পুকুরে মাছ ছেড়েছিলাম, সব মাছও ভেসে গেছে। এখন কিস্তি দেবো কীভাবে?”
পাঁচবাড়িয়া এলাকার তানজিরুল ইসলাম রানা বলেন, “গত বছর আলুর আবাদ করে দাম পাইনি। এবার আগাম জাতের ধান লাগিয়েছিলাম, কিন্তু রোপণের এক মাস না যেতেই সব পানিতে ডুবে গেল।”
কুলকান্দী ইউনিয়নের মেজবাহুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “জন্মের পর এই মাঠের ফসল কখনো বৃষ্টির পানিতে ডুবতে দেখিনি। রাস্তার পাশের পানি পারাপারের পথগুলো ভরাট করে দেওয়ায় আজ এই অবস্থা। দুই দিন ধরে ধান গাছ পানির নিচে, কিন্তু পানি সরানোর কোনো উদ্যোগ নেই।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, শুধু গামারিয়া নয়, পুরো উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানিতে ফসল তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে কাজ চলছে। আশা করি, পানি দ্রুত নেমে গেলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না।”
তবে কৃষকরা বলছেন, যদি সময় মতো পানি সরানো না হয়, তাহলে তাদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে এবং নতুন করে চারা লাগানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৯:০৭ ৪৬ বার পঠিত