রোহিঙ্গা সংকট: স্থায়ী সমাধান ও তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রোহিঙ্গা সংকট: স্থায়ী সমাধান ও তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫



রোহিঙ্গা সংকট: স্থায়ী সমাধান ও তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান এবং তহবিল বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তহবিল সংকটের কারণে আজকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ন্যূনতম জীবনমান বজায় রাখার যৌথ প্রয়াসও ভঙ্গুর হয়ে উঠেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ইতোমধ্যে এই সংকটের বিষয়ে সতর্ক করেছে। অবিলম্বে নতুন তহবিল না এলে, মাসিক রেশন অর্ধেকে নামিয়ে মাথাপিছু মাত্র ৬ ডলারে নামতে পারে, যা রোহিঙ্গাদের অনাহার ও অপুষ্টিতে নিমজ্জিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, ‘বিদ্যমান তহবিলের বাইরে নতুন ও বর্ধিত তহবিল নিশ্চিত করতে হবে এবং মিয়ানমার সরকার ও রাখাইনের অন্যান্য অংশীদারদের উপর ইতিবাচক পরিবর্তন ও দ্রুত রাজনৈতিক সমাধানের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে হবে।’

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারে চলমান সংঘাত সমগ্র অঞ্চলের জন্য এক গভীর উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এটি শুধু আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকেই ঝুঁকিতে ফেলছে না, বরং বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনও কঠিন করে তুলেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আট বছর পার হলেও রোহিঙ্গা সংকটের কোনো সমাধান দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। উপরন্তু, বাংলাদেশ প্রতিনিয়তই মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য হচ্ছে। সাংস্কৃতিক পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির কারণে রোহিঙ্গাদের ওপর অধিকার বঞ্চনা ও নির্যাতন রাখাইনে অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রান্তিকীকরণের প্রক্রিয়া আর চলতে দেওয়া যাবে না। যেসব বৈষম্যমূলক নীতি ও কর্মকাণ্ড আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তার সমাধান এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা এখনই গ্রহণ করা সম্ভব।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘পূর্ণাঙ্গ জাতীয় রাজনৈতিক মীমাংসার অপেক্ষা না করে রাখাইনের সমস্যাগুলোর চূড়ান্ত রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। তবে এর জন্য রাখাইন অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সকল জাতিসত্তার অংশগ্রহণে এমন একটি বন্দোবস্ত প্রয়োজন যেন রোহিঙ্গারা সমঅধিকার ও নাগরিকত্বসহ সমাজের অংশ হতে পারে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা, আর তাদের পরেই বৃহত্তম ভুক্তভোগী হল বাংলাদেশ। তবে রোহিঙ্গা সংকট কোনোভাবেই বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের কোনো দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়। আমরা শুধু একটি দায়িত্বশীল প্রতিবেশী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে আমাদের মানবিক দায়িত্ব পালন করে আসছি।’

তিনি যোগ করেন, ‘অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে কোনো যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সদাপ্রস্তুত।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের উচ্চপর্যায়ের রোহিঙ্গা সম্মেলন বিশ্বব্যাপী দৃঢ় সংকল্প তৈরি করবে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য বাস্তবসম্মত আন্তর্জাতিক সহায়তা নিশ্চিত করবে, যেখানে তহবিল সংগ্রহ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। একইসঙ্গে একটি রোডম্যাপ গ্রহণ করে সময় নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।’

বাংলাদেশ সময়: ০:০০:৩৪   ২৫৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


ইসরাইলি অবরোধ উপেক্ষা করে গাজা অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে ফ্লোটিলা
পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ৯, বন্ধ ইন্টারনেট
প্রতিমা বিসর্জনে সমাপ্তি হল শারদীয় দুর্গোৎসব
পটুয়াখালীতে এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন
ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুরে কোস্ট গার্ডের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম
বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গোৎসব
গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা - ধর্ম উপদেষ্টা
পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
জামালপুরে জামিয়া আল-হেরা মহিলা মাদ্রাসার বার্ষিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
শেষ মুহূর্তের গোলে বার্সেলোনার মাটিতে পিএসজির জয়

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ