
সরকার অধ্যাদেশ জারি করে অথবা আরপিওতে সংশোধনী এনে একটি গণভোট পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা প্রদান করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, গণভোট করা যাবে না– এমন কোনো বিধান নেই। সুতরাং নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করতে পারবে। আগে হলেও ফলাফল একই। তবে একই দিনে একটা সুবিধা আছে যে, একই আয়োজন, একই অর্থব্যয় এবং একই লজিস্টিক– একবার ভোট সেন্টারে যাওয়া। তাতেই সুবিধা পাওয়া যাবে।
আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘আগামী নির্বাচন গুণমানসম্পন্ন ও সবার জন্যে গ্রহণযোগ্য করার চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘নাগরিক যুব ঐক্য’ এর আয়োজন করে।
সালাহউদ্দিন বলেন, একটা প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে– গণভোট একই দিনে করলে সুবিধা এবং অসুবিধা কী? আমরা সুবিধার কথা বলেছি। এই নির্বাচনটা হওয়ার জন্য আর দুই-তিন মাস বাকি আছে। একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা একটা মহাযজ্ঞ। এই একই আয়োজন করতে হবে যদি আলাদাভাবে আরেকটি গণভোটের আয়োজন করা হয়। কারণ একই ব্যালট বক্স, একই পোলিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার, ভোট সেন্টার সমস্ত আয়োজন, সমস্ত বাজেট সব কিছুই হবে অথচ ফলাফল একই। নির্বাচনের দিনে যে গণভোটের রায়টা আসবে, সেই ফলাফল যেমন একই বাইন্ডিং হবে পার্লামেন্টের ওপর, আর আগে হলেও একই বাইন্ডিং। কিন্তু নির্বাচন বিলম্বিত করার যেকোনো প্রয়াসকে আমরা এড়াতে পারব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আমি কোনো দলের নাম নেব না, কেউ কেউ বলছেন, আগে গণভোট হতে হবে, কনস্টিটিউশন অর্ডার করতে হবে, এগুলো আমাদের মনে হয় পরিহার করা উচিত। এগুলোই হচ্ছে মূল চ্যালেঞ্জ, নির্বাচনটা চ্যালেঞ্জ না। যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায় বিভিন্ন কায়দা-কানুনের মধ্য দিয়ে, সেটাই হচ্ছে চ্যালেঞ্জ।’
অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নির্বাচন নিয়ে আগে যেখানে মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও অনিশ্চয়তা ছিল, এখন তা কাটিয়ে ওঠা গেছে। নির্বাচনের অনিশ্চয়তার সেই মেঘ কেটে গেছে। নির্বাচন যেন গ্রহণযোগ্য হয়, সে লক্ষে প্রচেষ্টা চলছে। দেশের সামনে এখন নির্বাচনের পথ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নির্বাচন ছাড়া দেশের সামনে কোনো বিকল্প নেই। এখন যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাতে নির্বাচনই একমাত্র উপায়।
গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণভোটের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও পিআর প্রসঙ্গটি এখন আর আলোচনার কেন্দ্রে নেই। একই দিনে গণভোট ও নির্বাচন– এতে কোনো বাধা নেই। কেবল ভোটের সংখ্যা নয়, প্রার্থীদের কর্মসূচি, দৃষ্টি ও প্রস্তাবনাই নির্বাচনের গুণমান নির্ধারণ করবে। এখন ভোটাররা শুধু ‘মার্কা’ দেখে নয়, মানুষ দেখে ভোট দেবেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহ–সভাপতি তানিয়া রব, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৫:৩০ ১৯৭ বার পঠিত