
টাইফয়েড প্রতিরোধে শুরু হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে ১৮ দিনব্যাপী “টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫”। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১০টায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহাম্মদ মুশিউর রহমান।
তিনি জানান, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত এই ক্যাম্পেইন চলবে। প্রথম ১০ দিন প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ১ ডোজ করে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তী ৮ দিন বিদ্যালয়-বহির্ভূত শিশুদের কমিউনিটি পর্যায়ে (আউটরিচ ইপিআই কেন্দ্র) টিকা প্রদান করা হবে। যেসব শিশু কোনো কারণে বাদ যাবে, তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলা (সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়া) এই ক্যাম্পেইনের আওতায় থাকবে। মোট ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৫৬৫ জন শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৪ লাখ ৮৫৮ জন বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী এবং ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭০৭ জন বিদ্যালয়-বহির্ভূত শিশু।
জেলায় মোট ২,১৭৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ১,০৫৬টি অস্থায়ী ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে ২ জন টিকাদান কর্মী ও ৩ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে ১ জন টিকাদান কর্মী ও ২ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ ৩ জনের দল কাজ করবেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ক্যাম্পেইন প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ইতোমধ্যে ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং মাইকিং, প্রচারপত্র বিতরণ ও বাড়ি বাড়ি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলছে।
ক্যাম্পেইন সফল করতে জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জেলা তথ্য অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সমন্বিতভাবে কাজ করছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশে জেলার সব মসজিদের ইমামদের জুমার খুতবার আগে টিকা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে বলা হয়েছে।
জাতীয় পর্যায়েও টেলিভিশন, সংবাদপত্র, মোবাইল মেসেজ ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।
টিকাদান চলাকালে জরুরি চিকিৎসা সহায়তার জন্য নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল এবং প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. শিউলি আক্তার, ডা. আফরোজা আক্তার পলি, ডা. জাহানারা আক্তার, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল হক, এবং জেলা ইপিআই সুপারিনটেনডেন্ট মো. লুৎফর রহমান। প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ডা. খোরশেদুল ইসলাম খান।
সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান বলেন, “টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। সঠিক সময়ে টিকা নিলে শিশুরা এ রোগ থেকে নিরাপদ থাকবে। আমরা আশা করি, সবার সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ জেলাকে শতভাগ টিকা কাভারেজের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫২:৫৮ ৩১ বার পঠিত