সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

স্বাগতিক বাংলাদেশের শুভ সূচনা

প্রথম পাতা » খেলাধুলা » স্বাগতিক বাংলাদেশের শুভ সূচনা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫



স্বাগতিক বাংলাদেশের শুভ সূচনা

দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সোমবার মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ১১ জাতি আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ দুই লোনাসহ ৪২-২২ পয়েন্টে হারিয়েছে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন উগান্ডাকে। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ১৪-১২ পয়েন্টে।

জমজমাট উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষেই ছিল স্বাগতিক বাংলাদেশের ম্যাচ। পুরো গ্যালারি ছিল দর্শকে পূর্ণ। নিজ দলের মেয়েদের দারুণ এক জয়ের সাক্ষী হয়েছেন সমর্থকরা। সারাক্ষণ তারা “বাংলাদেশ বাংলাদেশ” স্লোগানে মাতিয়ে রাখেন রূপালি-স্মৃতিদের।

যদিও প্রথমার্ধে ভালোই লড়াই করেছে উগান্ডা। শুরুতে বাংলাদেশের মেয়েদের একটু রক্ষণাত্মক মনে হয়েছে। তবে পুরো ম্যাচেই স্মৃতি আক্তার ছিলেন ব্যতিক্রম। মূলত ডিফেন্ডার হলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রেইডে গিয়ে পয়েন্ট তুলে নিয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি।

উগান্ডা প্রথমবারের মতো এসেছে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে। শারীরিক দিক দিয়ে তারা এগিয়েছিল স্বাগতিকদের চেয়ে। অভিজ্ঞতা ও ট্যাকটিকসে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তারপরও প্রথমার্ধে উগান্ডাকে খুব বেশি পিছিয়ে রাখা যায়নি। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ মাত্র দুই পয়েন্টে (১৪-১২ পয়েন্টে) এগিয়ে ছিল।

বিরতির পরও উগান্ডা বেশ কিছুক্ষণ ছিল খেলায়। একটা সময় তো বাংলাদেশের অর্ধ্বে ছিলেন কেবল স্মৃতি আক্তার। পয়েন্টেও ছিল সমতা। পরে আফ্রিকান প্রতিনিধি উগান্ডা এগিয়েও গিয়েছিল। তবে ডু অর ডাই রেইডে দুইজনকে ঘায়েল করে স্মৃতি দারুণভাবে দলকে ম্যাচে ফেরান। এরপর আর থামানো যায়নি স্বাগতিকদের। দ্বিতীয়ার্ধে দুই বার উগান্ডাকে অলআউট করে ব্যবধান অনেক বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতে নেয় ৪২-২২ পয়েন্টে। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ যেখানে ২৮ পয়েন্ট তুলেছে, সেখানে উগান্ডা তুলতে পারে মাত্র ১০ পয়েন্ট।

দারুণ জয়ে আসর শুরু করা বাংলাদেশ আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে জার্মানির। বুধবার উগান্ডা তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে।

আজকের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশের স্মৃতি আক্তার। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘শুরুতে আমরা কিছুটা চাপ অনুভব করছিলাম। যেহেতু কখনোই আমরা উগান্ডার সাথে খেলিনি, এই প্রথমবার খেলছি। ওদের ম্যাচটা আমাদের বুঝতে একটু সময় লেগেছে। এর জন্য শুরুতে একটু অগোছালো মনে হয়েছে। ওদের বুঝে নেওয়ার পরে আমরা অনেক ভালো খেলেছি।

আমাদের প্রতি কোচের নির্দেশনা ছিল যে, তোমরা দেখো আগে। যেহেতু এই প্রথমবার এই দেশটা খেলছে, তোমরা আগে ওদের খেলা একটু দেখো। দেখার পরে তোমরা সিদ্ধান্ত নাও।

অনেক ভালো লাগছে। জয় পেয়েছি। পরবর্তীতে চেষ্টা থাকবে যে প্রথম ম্যাচে যেহেতু জিতেছি, পরের গুলোও ইনশাআল্লাহ জিতবো। এটা আমার প্রথম বিশ্বকাপ। আমার খেলে অনেক আনন্দ লাগছে যে, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি। আরও চেষ্টা করব। আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে পদক এনে দেবো।’

বাংলাদেশ কোচ মুন্সী আরদুজ্জামান বলেন, ‘উগান্ডা দল আমাদের চেয়ে শারীরিকভাবে ও শক্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে। তাই চেয়েছিলাম প্রথম ৫ মিনিট ওদের খেলা দেখব। আমাদের গুছিয়ে উঠতেও কিছুটা সময় লেগেছে। সে কারণে আমরা শুরুতে একটু চাপে ছিলাম। তবে গুছিয়ে ওঠার পর ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনেছি।

ওদের খেলাটা বোঝার পর খেলোয়াড়দের সেভাবে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী খেলায় সাফল্য এসেছে। দর্শকদের শতভাগ সমর্থন পেয়েছি, এতে খেলোয়াড়রা পুরোপুরি উজ্জীবিত ছিলেন। আশা করছি, এভাবে ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে এবং আমরা একটি পদক উপহার দিতে পারব।’

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২০:৫৬   ৮ বার পঠিত