
দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় সংগঠনের সদস্যরা বেসরকারি খাতের অগ্রগতির জন্য ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ঐকমত্যের উপর জোরারোপ করেছেন।
তারা দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক নীতিমালার সংস্কার, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন ও অটোমেশন প্রবর্তন, লজিস্টিক খাতের উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ প্রাপ্তির পাশাপাশি প্রক্রিয়া সহজীকরণ, শিল্পখাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ, সর্বোপরি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর জোর দেন।
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, সাবেক সভাপতিবৃন্দ, সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতিবৃন্দ, সাবেক সহ-সভাপতিবৃন্দ, সাবেক পরিচালকবৃন্দ সহ সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
৬৪তম সাধারণ সভার সূচনা বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকট, শুল্ক হার বৃদ্ধি, সহায়ক রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অনুপস্থিতি, সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি, স্থবির বিনিয়োগ, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশের অস্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চলমান জ্বালানি সংকটের কারণে অর্থনীতির বেশকিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত বেশকিছু পদক্ষেপের ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতিতে কিছুটা ইতিবাচক প্রবণতা পরিলক্ষিত হলেও, ব্যবসা পরিচালনায় সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে সুশাসন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং যুগোপযোগী নীতিমালা বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
তাসকীন আহমেদ জানান, বেসরকারিখাতের স্থিতিশীলতা আনয়ন এবং নীতি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চলতি বছর জুড়ে ৩১টি খাত ভিত্তিক সেমিনার, নীতি সংলাপ, কর্মশালা ও ফোকাস গ্রুপ আলোচনার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে ৩৫টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করেছে ঢাকা চেম্বার।
তিনি আরও বলেন, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার লক্ষ্যে প্রথমবারের মত ‘অর্থনৈতিক অবস্থান সূচক (ইপিআই)’-এর প্রবর্তন করেছে ডিসিসিআই, যা উৎপাদন ও সেবা খাতে ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিবর্তন পরিমাপ করবে।
তাসকীন আহমেদ বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে ঢাকা চেম্বার এ বছর সংযুক্ত আরাব আমিরাত, শ্রীলংকা, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, তাইওয়ানে মোট ৭টি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল প্রেরণ করেছে এবং ৬টি দেশি-বিদেশি সংস্থা ও বাণিজ্য সংগঠনের সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়াও সামনের দিনগুলোতে দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে ঢাকা চেম্বার নিরলসভাবে কাজ করবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সাধারণ সভার মুক্ত আলোচনা পর্বে ঢাকা চেম্বার সাবেক সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আলহাজ আব্দুস সালাম, সাবেক পরিচালক ও আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন, সাবেক পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান ও আলহাজ মোহাম্মদ সারফুদ্দিন এবং মেসার্স ব্রান্ড বাংলার স্বত্বাধিকারী রাজু আহমেদ মামুন প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।
সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআই-এর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ড. এ কে এম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৩:০৩ ১২ বার পঠিত