![]()
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকাহত রংপুর বিএনপি। দলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে সর্বত্রই নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই শোকাহত নেতা-কর্মীরা নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভিড় করছেন।
অনেকেই কার্যালয়ে এসে দলীয় নেত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে হু-হু করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানে সকালে কোরান তেলাওয়াত ও দুপুরে মিলাদ মহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ ও নগরজুড়ে পবিত্র কোরান তেলাওয়াত, মাইকযোগে প্রচার করছে দলটির নেতাকর্মীরা।
বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত মিলাদ ও দোয়া মহাফিলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ-উন-নবী ডন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা, কাউনিয়া বিএনপি নেতা মোনায়েম ফারুকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানার বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনায় কোরান খতম ও দোয়ার আয়োজন করেন বিএনপি নেতারা।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনে ত্যাগের কারণে দেশবাসী তাকে আপোসহীন নেত্রী উপাধি দিয়েছেন। তিনি চাইলে বিদেশে অবস্থান করে আয়েশি জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু দেশের মানুষকে ভালোবেসে তিনি দেশে থেকেছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছে। তার মৃত্যুতে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ শোকাহত। মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণীয় নয়।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন হিমালয়সম ধৈর্যের প্রতীক। কারাবরণ, অসুস্থতা আর ব্যক্তিগত শোককে তুচ্ছ করে তিনি আমৃত্যু এদেশের মানুষের অধিকারের কথা বলে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে একটি আপোসহীন ইতিহাসের অবসান হলো।
রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন আপোসহীন, অভিজ্ঞ ও দূরদর্শী রাজনৈতিক অভিভাবক হারালো। আমরা এমন এক আলোকবর্তিকা হারালাম, যার অভাব কোনোদিন পূরণ হবার নয়।
কারণ বাংলাদেশ যখনই কোনো সংকটে বা দুর্যোগে পড়েছে তখনই বেগম খালেদা জিয়া হাল ধরেছিলেন শক্তভাবে।
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণ করার জন্য রংপুর থেকে নেতাকর্মীরা যে যার মতো করে ঢাকায় রওনা হয়েছেন বলে জানান তিনি।
রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের চিরকালীন প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন বেগম খালেদা জিয়া। তার মৃত্যুতে আজ শুধু একটি রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়নি, বরং বাংলাদেশ তার মমতাময়ী অভিভাবককে হারালো। তিনি যেভাবে প্রতিকূল সময়ে দেশের হাল ধরেছিলেন, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।
তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়া তার জীবদ্দশায় কখনো কোনো আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে মাথানত কিংবা আপোস করেননি। সংকটে-সংগ্রামে তিনি ছিলেন অবিচল। খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনে বহু চড়াই উত্রাই পাড়ি দিয়েছেন। তার সততা, সাহস ও আপোসহীন দেশপ্রেম তাকে গৃহবধূ থেকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছিল তিনবার।
আমরা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে প্রার্থনা করি, তিনি যেন এই মহীয়সী নারীকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন। আল্লাহ যেন তার পরিবার এবং দেশবাসীকে এই শোক সইবার শক্তি দান করেন। বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় জেলা ও মহানগর বিএনপি পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৭:৪০ ৮ বার পঠিত