ইলিশের জীবনরহস্য উম্মোচনের কৃতিত্ব নিয়ে দেশের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মধ্যে টানাটানি শুরু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন- এই কৃতিত্ব তাদের। অপরদিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি- এই কাজ তারাই প্রথম করেছেন।
ইলিশের জীবন রহস্য উদ্ভাবনের কৃতিত্ব ‘হাইজ্যাক’ করার অপচেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি)। ইলিশ নিয়ে কাজ করা বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষক দলের দাবি, ইলিশের জীবন রহস্য উম্মোচনে গবেষণার কৃতিত্ব তাদের। কিন্তু দেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সেই কৃতিত্ব নেওয়ার অপচেষ্টা করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, ২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তারা ইলিশের জীবনরহস্য উম্মোচনে কাজ করেছেন। গবেষণার বেশিরভাগ কাজ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায়।
তবে এ বিষয়ে কাজ করলেও আন্তর্জাতিক জিনোম ডাটাবেজ-ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন থেকে নিবন্ধন নেননি তারা। গবেষণার তথ্য প্রকাশ করলে পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ত্ব হাতছাড়া হয়ে যাবে বলে দাবি তাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের প্রধান সমন্বয়কারী হাসিনা খান বলেন, ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনে ডাটা জমা দিলে, পরে সেটা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়।’
জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরাও বলছেন, এই বিষয়ে পেটেন্ট করা যায় না।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
বাকৃবি গবেষক দলের সমন্বয়কারী সামসুল আলম জানান, তারা ২০১৫ সালে ইলিশের জীবন রহস্য উম্মোচনে কাজ শুরু করেন। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক জিনোম ডাটাবেজ ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন থেকে স্বীকৃতিও পেয়েছেন তারা।
‘আমাদের গবেষণাটি জাতীয়ভাবে এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সেমিনারে এটি উপস্থাপন করেছি। তারপরে আমেরিকাতে আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে আমরা উপস্থাপন করেছি।’
গত শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দেশের দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের জাতীয় মাছ ইলিশের জীবন রহস্য উন্মোচনের খবর।
একইদিন বাকৃবির গবেষকরাও সংবাদ সম্মেলন করে ইলিশের জীবনরহস্য উম্মেচনের ঘোষণা দেন।
বাকৃবির ড. সামসুল এ বিষয়ে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক যে ডাটাবেজ আছে সেখানে আমরা সার্চ করে দেখেছি। সেখানে তাদের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) কোনো তথ্য আমরা পাইনি। এটি আমাদের আবিষ্কারের ক্রেডিট হাইজ্যাক করার অপচেষ্টা।’
‘একই বিষয়ে অনেকে একই সময়ে গবেষণা করতেই পারেন। আমাদের গবেষণাটি অনেক আগে সম্পন্ন করেছি এবং বিভিন্ন স্থানে তার প্রমাণ রয়েছে। এমনকি এই কাজে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একটা সুপার কম্পিউটারও ব্যবহার করেছি, যার প্রমান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে গেলেই পাওয়া যাবে।’
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩০:৪৫ ২৬৬ বার পঠিত