সাফল্যের ঝুঁড়িতে বড় অর্জন দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার সঙ্গে নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদান শেষে ঢাকার উদ্দেশে নিউইয়র্ক ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা আটটা ২০ মিনিটে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে নিউইয়র্কে জন এফ. কেনেডি (জেএফকে) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি যাত্রাবিরতি করবে।
এদিকে জেএফকে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। স্থানীয় সময় সকাল সাতটা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইট লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে। লন্ডনে ১০ ঘণ্টার বেশি যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশে সময় আজ রাত ১১টা ২০ মিনিটে) ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন ছেড়ে যাবেন। সোমবার সকালে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান ঢাকার হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।
সাধারণ পরিষদে ৭৩তম অধিবেশনে দেওয়া এবারের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান চেয়ে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশ্বসভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণের প্রশংসাও করেছেন বিশ্বনেতারা। অন্যদিকে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘের পুরো অধিবেশনেই আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ এবং ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা’ শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানকালে প্রধানমন্ত্রী দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করেন। এগুলো হচ্ছে— বৈশ্বিক সংবাদ সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস)-এর ‘ইন্টার ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ এবং নিউইয়র্ক, জুরিখ ও হংকংভিত্তিক তিনটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের নেটওয়ার্ক গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশনের ‘স্পেশাল ডিস্টিংশন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ’ অ্যাওয়ার্ড।
প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং ওইদিন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন। অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাচ রাণী ম্যাক্সিমা এবং অ্যাস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্সটি কালজুলাইদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্পেরও দেয়া অভ্যর্থনায়ও যোগ দেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট, সাইবার নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা, নারী ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা এবং বিশ্বের মাদক সমস্যা সংক্রান্ত সমস্যাসহ বেশ ক’টি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। শেখ হাসিনা মার্কিন চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ ও গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া একটি নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন এবং প্রবাসী সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মিরা প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে জেএফকে বিমাবন্দরে জড়ো হন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, উপ-প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি, কার্যকরী সদস্য শাহানারা রহমান, কৃষিবিদ আশরাফুজ্জামান, মোর্শেদা জামান, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহ্বায়ক তারিকুল হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক বাহার খন্দকার সবুজ প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা
এদিকে রোহিঙ্গা সংকটে দায়িত্বশীল নেতৃত্বের জন্য দুটি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় এবং ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে নিউইয়র্কের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. জিয়াউদ্দিন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. মাসুদ বিন মোমেন এবং গণভবন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:২৬:৩২ ২১৯ বার পঠিত