শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুবিজুল হক বলেছেন, শ্রমিকদের উন্নত ও
নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও
নিরাপত্তার বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে সরকার এই
মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ রাজশাহীর তেরখাদা এলাকায় মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ১৯ বিঘা জমির ওপর
আন্তর্জাতিকমানের জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ
ইনস্টিটিউটের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথির বক্তৃতায় এসব বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের পেশাগত অনেক জটিল রোগ হয় । এসব রোগের
চিকিৎসা সাধারণ হাসপাতালে দেয়া সম্ভব হয় না। অনেক সময় রোগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট
ধারণাও পাওয়া যায় না। এ সকল পেশাগত রোগ সম্পর্কে গবেষণা এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ ইনস্টিটিউট
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি পেশাগত রোগের চিকিৎসায় পিপিপি’র মাধ্যমে
নারায়ণগঞ্জে ৩শ’ শয্যার একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে বলে উল্লেখ
করেন। তিনি আরো বলেন, এ ইনস্টিটিউটে শ্রমিক-মালিক এবং মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টের
বিভিন্ন বিষয়ে আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়ে
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও, সুইডেন, ডেনমার্ক এবং নেদারল্যান্ডস সরকার
কারিগরি সহায়তা এবং ট্রেইনারসহ সার্বিক সহযোগিতার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ
করেছে। শ্রমিকদের দুর্ঘটনা, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য
বাংলাদেশে এটিই প্রথম ইনস্টিটিউট। আশপাশের দেশগুলোর মধ্যে ভারতে শুধু এ ধরনের একটি
প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।
ফলে এসব দেশের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য শ্রম সংশ্লিষ্ট
লোকজন এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন
বলেন, রাজশাহীতে এ ধরনের একটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন
অগ্রযাত্রায় আরো একটি মাইলফলক উন্মোচিত হলো। তিনি বলেন, শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে
মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ চলছে, ভবিষ্যতে এখানে একটি কৃষি
বিশ^বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশের অগ্রযাত্রায় রাজশাহীর এ সকল প্রতিষ্ঠান
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব
আশরাফ শামীম, বিআইআরসি’র কমানডেন্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম, কলকারখানা ও
প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শামসুজ্জামান ভূঁইয়া, শ্রম অধিদপ্তরের
মহাপরিচালক শিবনাথ রায় এবং সেনা কল্যাণ সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী কর্নেল এবিএম
মিজানুর রহমান বক্তৃতা করেন।
এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে
এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৮:০৭ ২২২ বার পঠিত