পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, উন্নয়ন ও প্রসারে আন্তর্জাতিক পরিম-লের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন বিল-২০১৭’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপনকালে মন্ত্রী ইফায়েস ওসমান জানান, ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন অর্ডার বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন প্রণয়নের জন্য বিলটি সংসদে তোলা হয়েছে।
এসময় জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, মো. নূরুল ইসলাম ওমর, সেলিম উদ্দিন, বেগম রওশন আরা মান্নান বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে তা কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী মন্ত্রীসভায় বিলটি অনুমোদিত হয়। এরপর ১১ জুন সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের কাজের বর্ধিত পরিধি, দেশের বর্তমান বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানের আলোকে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা এবং পারমাণবিক অবকাঠামোগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন বাতিল ও সংহত করে নতুন আইন করা দরকার। নতুন আইন হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কর্মকা- ত্বরান্বিত হবে বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্যের সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠিত হবে। সরকার নির্ধারিত শর্তে তারা নিযুক্ত হবেন, চেয়ারম্যান হবেন সংস্থার প্রধান। এই কমিশন খাদ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, পরিবেশ ও শিল্পের ক্ষেত্রে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের প্রসার, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির নকশা ও প্রযুক্তি এবং ব্যবহারিক সামগ্রীর উন্নয়ন করবে। এছাড়া বিলে কমিশনের সহায়তার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির সুযোগ রাখা হয়েছে।
বিলে কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের নিয়োগ, মেয়াদ ও পদত্যাগ, প্রধান নির্বাহী, কমিশনের সভা, কমিশনের কার্যাবলী, অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব নিয়োগ, বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন, আবিস্কার, উদ্ভাবনসহ মেধাস্বত্ব, কোম্পানী গঠন, বাজেট প্রণয়ন, কমিশনের প্রতিবেদন, কমিশনের জনবল কাঠামো, তহবিল, হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা, গোপনীয়তা, জনসেবক, ক্ষমতা, বিধি-প্রবিধি প্রণয়নের ক্ষমতাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান করা হয়েছে। এছাড়া কমিশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় স্থাপন ও প্রয়োজনে সরকারে অনুমোদনে দেশের যে কোন স্থানে একাধিক শাখা কার্যালয় স্থাপনের বিধান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৪:৩৪ ৬৭৩ বার পঠিত