জেলার কৃষকরা আমন ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। পাকা আমন ধানের গন্ধে ভরে উঠছে আবহমান গ্রামীন জনপদ। সোনালি মাঠ এখন হেমন্তের পাকা ধানে ভরপুর। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধান কাটার উৎসব। কৃষক-কৃষাণীরা এখন ধান কাটা, বাড়িতে আনা, মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে হাট-বাজারে নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে।নতুন ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
নড়াইল সদর উপজেলার জুড়ালিয়া গ্রামের নয়ন ভূঁইয়া জানান, বর্তমানে প্রতি মণ নতুন ধান সাড়ে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নড়াইল সদর উপজেলার উজিরপুর গ্রামের কৃষক রহমান ফকির (৫৭) বলেন, এবার দেড় একর জমিতে চিকন ক্ষীরকোন এবং মোটা মাছরাঙ্গা ধানের চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। চলতি বছর অতি বৃষ্টির কারণে নিম্নাঞ্চলের অনেক কৃষকের ধান পানিতে ডুবে গিয়েছিল।অনেকে ফসলহানির আশংকাও করেছিলেন।প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকরা খুশি বলে তিনি জানান।
সদর উপজেলার ধোপাখোলা গ্রামের কৃষক শংকর বিশ্বাস বলেন,৫ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। ৮০ শতক জমির ধান পচন রোগে নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও ফলন খারাপ হয়নি।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৫শ৭৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন এবং ৫ হাজার ২শ৯০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধানের চাষ হয়েছে। কৃষকরা এবার চিকন ধান ব্রি-৩৯, বীনা-৭, পাইজাম, মিনিকেট, ক্ষীরকোন, বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের চিকন ও মাঝারি চিকন ধান এবং মোটা ধান দীঘা, ঢ্যাপো, গুটি স্বর্ণা, স্থানীয় নাম হরি, হাবু, পান্না ধান চাষ করেছেন।
নড়াইল শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র রূপগঞ্জ বাজারের ধান ব্যবসায়ী উজ্জল কুন্ডু বলেন, বাজারে সবেমাত্র ধান উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে চিকন ব্রি-৩৯ ও বীনা-৭ ৮শ থেকে সাড়ে ৮শ’ টাকায় এবং মোটা স্বর্ণা সাড়ে ৭শ’ টাকা থেকে ৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রুপগঞ্জ বাজারের চাল ব্যবসায়ী বিধান সাহা জানান,নতুন ধান উঠার পর গত এক সপ্তাহে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫টাকা কমেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় জানান, এবার ৮৬ হাজার ৬৮৬ মেঃটন চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করা যায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। পোকার আক্রমন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও তা গননার মধ্যে আসেনি। কৃষক আমন ধানের বাম্পার ফলনে খুশি বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫২:৫৭ ৮২৬ বার পঠিত