
প্রকাশ্যে নসিমনচালক ও তার প্রতিবন্ধি ভাগিনাকে পিটিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়া সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র ও বাংলাদেশ বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদেকুর রহমানকে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দিনগত রাত পৌনে ১টায় সোনারগাঁয়ের গোয়ালদী নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এনামুল হক জানান, যাদের মারধর করা হয়েছিল তারা কোনো মামলা বা আইনগত ব্যবস্থা নেননি। উপরন্তু তারা আপস করেছেন। সে কারণেই মুচলেকায় সাদেকুর রহমানকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তার শারীরিক অবস্থারও অবনতি ঘটেছিল।
জানা যায়, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সামনে গত শনিবার সোনারগাঁ পৌর কার্যালয় থেকে নিজ গাড়িতে রয়েল রিসোর্ট নামে একটি হোটেলে পৌর প্রকল্প পরিচালককে বিদায় জানাতে যাচ্ছিলেন মেয়র সাদেকুর রহমান। এসময় সোনারগাঁ জাদুঘরের সামনে উদ্ভবগঞ্জ থেকে আসা টিপুরদীগামী বাঁশবোঝাই নসিমনের সঙ্গে ধাক্কায় তার গাড়ির এক পাশের রঙ উঠে গিয়ে দাগ পড়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদেকুর রহমান গাড়ি থেকে নেমে নিজের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে চালক জামাল হোসেন ও তার ভাগিনা তামিমকে মারতে শুরু করেন। অপরাধ শিকার করে জামাল মেয়রের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও রক্ষা পাননি।
এ ঘটনায় দু`জনকে মারধর করে গাড়িসহ আটক করে রাখা হয়। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পর মেয়র সাদেকুর রহমান বাসায় ফেরার পথে আটক দু’জনকে ছেড়ে দেন।
নির্যাতিত জামাল হোসেন উপজেলার পরমশ্বেরদী গ্রামের খবিরউদ্দিনের ছেলে। তিনি পৌর এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করেন। ছেড়ে দেওয়ার পর নির্যাতিতদের স্থানীয় যুবক রিপন খাঁন প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পরে তাদের পরিবার সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। শুরু হয় নিন্দার ঝড়। এ ঘটনায় জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবখানে মেয়রের শাস্তি দাবি উঠে।
পরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের নির্দেশে সোমবার দিনগত রাতে নিজ বাসা থেকে পৌর মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান দাবি করেন, নসিমন চালক ও তার ভাগিনাকে মারধরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তাদের কাছে মাফ চেয়েছেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে আটক করা গাড়িসহ তাদের ছাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে রাজনৈতিকভাবে স্বার্থ উদ্ধারের জন্য একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫২:৫২ ২৭৫ বার পঠিত