আগামী এক মাস ক্রিকেটে বুঁদ হয়ে থাকবে বাংলাদেশ। চার-ছক্কার ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টি লড়াইয়ে মাতবে আবালবৃদ্ধবনিতা। শহর, গ্রাম, পাড়া কিংবা মহল্লা- সবখানে চলবে উৎসব। বিপিএল যে চলে এল!
দুই বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসর শুরু হচ্ছে আজ। দুপুর সাড়ে ১২টায় উদ্বোধনী ম্যাচে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স মুখোমুখি হচ্ছে চিটাগং ভাইকিংসের। বিকাল ৫.২০টায় পরবর্তী ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটস খেলবে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে।
গত আসরের মতো এবারও সাতটি দল অংশ নিচ্ছে বিপিএলে। ফাইনালসহ মোট ৪৬টি ম্যাচ খেলা হবে। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা, সিলেট আর চট্টগ্রামে। প্রথম ১৪টি ম্যাচ আয়োজন করবে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ১৫ জানুয়ারি বিপিএল চলে যাবে সিলেটে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পরবর্তী আটটি ম্যাচ খেলা হবে।
সিলেট পর্ব শেষে আবার ঢাকায় ফিরবে টি-টোয়েন্টির জমজমাট এই লড়াই। ২১ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পরবর্তী ছয়টি ম্যাচ খেলা হবে মিরপুরে। এরপর চট্টগ্রাম পর্ব। ২৫ থেকে ৩০ জানুয়ারি মোট ১০টি ম্যাচ আয়োজন করবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। চট্টগ্রাম মাতিয়ে ফাইনালসহ বাকি ম্যাচগুলো বিপিএল আবার ঢাকায় ফিরবে। ৮ ফেব্রুয়ারি কোনো এক দলের হাতে উঠবে ষষ্ঠ আসরের শিরোপা।
কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থাকছে না বিপিএল ২০১৯-এ। তবে মাঠের লড়াইটা মোটেও সাদামাটা হবে না। দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার মিলিয়ে সাতটি ফ্র্যাঞ্চাইজিই শক্তিশালী দল গড়েছে এবার। শিরোপার জন্য তীব্র লড়াই হবে। বিভিন্ন দলের কোচ, অধিনায়করাও তা-ই মনে করছেন।
ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্স, শহীদ আফ্রিদির মতো টি-টোয়েন্টির দুনিয়ার বড় বড় সুপারস্টাররা মাতাবেন এবারের আসর। সঙ্গে মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক আর মোস্তাফিজরা তো আছেনই! নিষেধাজ্ঞার কারণে গত তিন আসর মিস করা মোহাম্মদ আশরাফুলও ফিরেছেন। এবারের বিপিএলে তাই ভিন্ন আমেজ। তাতে বাড়তি কিছু যোগ করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক। রাজনীতির মাঠ জয় করে ফেরা মাশরাফির সামনে এখন বিপিএলের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ।
মাশরাফির নেতৃত্বেই গত আসরে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে রংপুর। মাশরাফি এবারও ভালো কিছুর আশা করছেন। ডি ভিলিয়ার্স আর গেইলের মতো মারকুটে ব্যাটসম্যানকে দলে পেয়েছেন তিনি। সঙ্গে মেহেদী মারুফ, নাজমুল ইসলাম অপু, মোহাম্মদ মিঠুনের মতো প্রতিশ্রুতিশীল দেশি ক্রিকেটার আছেন। মাশরাফি জানিয়েছেন, শুরুটা জয় দিয়েই করতে চান তিনি। যদিও মুশফিকের চিটাগংয়ের বিপক্ষে জয় পাওয়া এতটা সহজ হবে না বলেই ধারণা রংপুর দলপতির।
মুশফিকের চিটাগংও শক্তিশালী দল গড়েছে এবার। লুক রঞ্চি, মোহাম্মদ শাহজাদের মতো মারকুটে ব্যাটসম্যান আছে ভাইকিংস শিবিরে। আছেন ক্যামেরন ডেলপোর্টের মতো অলরাউন্ডার। বোলিং বিভাগ বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। সানজামুল ইসলাম, নাঈম হাসানের মতো স্পিনার আছেন। সব মিলিয়ে চিটাগংকে সমীহ জানাচ্ছেন মাশরাফি, ‘আপনি নিদাহাস ট্রফির কথা চিন্তা করুন। মুশফিক একাই একটা ম্যাচ জিতিয়েছেন। ওদের দলটা খুব শক্তিশালী।’
ভাইকিংস অধিনায়ক মুশফিকও শুরুতে জয় চান, ‘তারা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন, ঠিক আছে। তবে এবার কিন্তু সবাই নতুন করে শুরু করবে। কাগজে-কলমে আমাদের দলটা অত শক্তিশালী না হলেও আমাদের কয়েকজন কার্যকর টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় আছে। যাদের নিয়ে ভালোভাবে আসর শুরু করতে পারব বলে আত্মবিশ্বাসী আছি।’
রাজশাহীকে এবার নেতৃত্ব দেবেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ম্যাচেই তার সামনে সাকিব আল হাসানের ঢাকা ডাইনাইমাইটস। বরাবরের মতো এবারও শক্তিধর দল নিয়েই নেমেছে ঢাকা। সুনীল নারিন, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেলের মতো ম্যাচ উইনার আছে তাদের। তবে রাজশাহীরও আছেন মোস্তাফিজ রহমান, রায়ান টেন ডেসকাটের মতো তারকা। কাজেই কেউ কাউকে ছেড়ে কথা কইবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৪০:৫৮ ২৪০ বার পঠিত
