
‘বরেণ্য রাজনীতিবিদ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতি সহজে
পূরণ হবে না। আমি ১৯৬৮ সাল থেকে তাঁকে চিনি। ১৯৬৯ সালের সেই গণভ্যূথানে
উত্তাল দিনগুলোতে রাজপথের মিছিলে তাঁর যে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আমি তা গভীর
শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি একজন ছাত্র সংগঠক
হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবে
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্মরণে বঙ্গবন্ধু দুস্থ কল্যাণ সংস্থা আয়োজিত আলোচনা
সভা ও দোয়া’র অনুষ্ঠানে এসব কথা বলে।
‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যারা পরাজিত হয়েছে,
জনগণকে উপেক্ষা করে সংসদ বর্জনের যে কথা বলছে, তাদের প্রতি আহ্বান যদি
গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকে তাহলে সংসদ বর্জন করে নয় গঠনমুলক
সমালোচনা করে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত হোন। বিদেশিদের নিকট নালিশ
না করে জনগণের নিকট ক্ষমা চেয়ে রাজনীতি করুন। আপনার ষড়যন্ত্র পরিহার করে
নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করুন। সংসদে যোগদান দিন।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী
রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পিতা। সৈয়দ
নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও ব্যক্তি। সৈয়দ আশরাফুল
ইসলাম ছিলেন সেই গর্বিত পিতার যোগ্য সন্তান।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ও এরই ধারাবাহিকতায় ৩ নভেম্বর
জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর এই পরিবার অনেক জুলুমের স্বীকার হয়েছিল।
তাদেরকে ঢাকা শহরে অনেকে বাড়ি ভাড়া দিতে পারেনি। সেই দুঃসময়ে সৈয়দ
আশরাফুল ইসলাম লন্ডনে চলে যান তিনি সেখানে একই সাথে লেখাপড়া ও চাকরি করে
আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে গেছেন। তিনি অত্যন্ত সাহসী ও মেধাবী নেতা ছিলেন
ও খুব সাধারণভাবে চলাফেরা করতেন। কোনো অহমিকা ছিল না। সবাই তাঁর সাথে
দেখা করতে পারতেন।
রাজনীতিতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অবদান স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, ওয়ান
ইলেভেনের সময় দেশে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছিল সেই সংকট থেকে
দেশকে মুক্তির জন্য তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা ছিল। তাঁর সেই অবদানের পুরস্কার
হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো বর্ণাঢ্য ও
সংগ্রামী রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছিলেন। তিনি মন্ত্রী
হিসেবে দেশের সেবা করেছেন। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে আমরা একজন সৎ,
নির্লোভ ও দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতাকে হারালাম।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মোঃ মাহবুব হোসেন, বিশেষ অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এম এ করিম, বক্তৃতা করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য
কুদ্দুস আফ্রাদ, জাকির হোসেন, ও মোহাম্মদ খান মজলিশ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫০:৩২ ২৩১ বার পঠিত