আওয়ামীলীগের জেলা কমিটি ঘোষণায় আড়াইহাজারে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হবে বলে অনেকেই মনে করছেন। এমপি বাবুর শিবিরে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও ভিতরে ভিতরে চলছে চুল ছেঁড়া বিশ্লেষন। অনেকেই বলেছেন, এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর কাছ থেকে দলীয়ভাবে মূল্যায়ন না পেয়ে অনেকেই জেলা কমিটিতে মূল্যায়ন পেয়েছেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে একনেতা বলেন, আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এমপি বাবু তার নিজের বলয় গড়ে তুলেছেন। কিন্তু তিনি জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো প্রকার কর্তৃত্ব খাটাতে পারেনি। এতে করে ভবিষ্যতে এর প্রভাব থানা কমিটিতেও পড়বে বলে অনেকে মনে করছেন।

তিনি আরও বলেন, আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো দিনই গ্রুপিং ছিল না। নজরুল ইসলাম বাবু ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরই মূলত এখানে গ্রুপিংয়ের রাজনীতি চালু হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি অস্থিরতা বিরাজ করছেন। অনেকেই ইকবাল পারভেজের নেতৃতে রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। এতে এমপি বাবুর রোষানলের শিকার হচ্ছেন অনেকে।

খাগকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একনেতা বলেন, এমপি বাবু দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেনি। এতে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিএনপির জামায়াতের লোকজন প্রবেশ করেছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইকবালপন্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।

এমপি বাবু তাদেরকে আড় চোখে দেখেন। সুন্দর আলীর সাংগঠনিক পদের ঠাঁই পাওয়ায় ভালো চোখে দেখছে না অনেকেই। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এটা ভবিষ্যত রাজনীতিতে ইতিবাচক না হয়ে এমপি বাবুর জন্য নেতিবাচক (অশুভ) হয়ে দেখা দিতে পারে।

আড়াইহাজার পৌরসভা আওয়ামী লীগের একনেতা বলেন, সুন্দর আলী ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এমপি বাবুর চরম বিরোধীতা করেছেন। এতে করে এমপি বাবু তার প্রতি কিছুটা মনক্ষুণœ। গত পৌরসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর তিনি আওয়ামী লীগের অফিসসহ বিভিন্ন সাঁটানো ব্যানার পোস্টার ভাংচুর করেছেন। এতে পৌরসভায় আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগের দুংসময়ে সুন্দর আলী নৌকার পাল উঠিয়ে রেখে ছিলেন বলে অনেকেই দাবী। কিন্তু জেলা কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর পরই আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটি মেরুকরণের আভাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উক্ত কমিটিতে সুন্দর আলী গুরুত্বপূর্ণ পদে ঠাঁই পেলেন কেন ? এর পেছনে উদ্দেশ্য কি ? এটা কিসের ইঙ্গিত। তাহলে কি নতুন বলয় ধীরে ধীরে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করছেন।

জানা গেছে, জেলা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে ইকবাল পারভেজ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সুন্দর আলী, সদস্যরা হলেন-হালিম সিকদার, শাহাজালাল মিয়া, হেলো সরকার ও এমপি নজরুল ইসলাম বাবু।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, আগামী দিনগুলিতে রাজনৈতিকভাবে এমপি বাবুর অগ্রগতি বাধার সম্মুখিন হতে হবে। তার রাজনীতি যত তাড়াতাড়ি প্রসারিত হয়েছিল। মনে হচ্ছে তত দ্রুতই থমকে যাবে।

তবে অনেকেই আবার দাবী করেছেন, এমপি নজরুল ইসলাম বাবু সারাদেশে একটি সংগঠন পরিচালনা করেছেন। রাজনীতিতে তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সুন্দর আলী অতীতের নানা কর্মকান্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা আতংকও রয়েছে। এখানে তার একটি নিজের ব্যাক্তিগত বলয় রয়েছে।

আড়াইহাজার থানা আওয়ামী লীগে এমপি বাবুর প্রতিপক্ষ হিসেবে ইকবাল পারভেজের নেতৃত্বে যে নতুন বলয় গড়ে উঠার চেষ্টা হচ্ছে, সেটা আড়াইহাজারের রাজনীতিতে আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা, সেটা আমাদের বোদগম্য নয়। তবে সময় হলেই সব পরিস্কার হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০:৫৫:৫৪   ৭০০ বার পঠিত