গণতান্ত্রিক রাজনীতির দার্শনিক ছিলেন বঙ্গবন্ধু

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » গণতান্ত্রিক রাজনীতির দার্শনিক ছিলেন বঙ্গবন্ধু
সোমবার, ২৫ মার্চ ২০১৯



---

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি জাতিকে স্বাধীন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন দর্শন স্থাপন করেছেন।

সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

খালিদ মাহমুদ বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে জাতিকে পুরো স্বাধীনতার নির্দেশনা দিয়ে দিলেন বঙ্গবন্ধু। সেটা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। প্রতিটি কথায় গণতন্ত্র ছিল। কোথাও কোনো বিপ্লব নেই। গণতন্ত্রের জন্য কী করতে হবে প্রত্যেকটি জায়গায় তিনি বলেছেন। দেশের মানুষকে তিনি সেদিন আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, কোথায় গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।

সেদিন তিনি যদি বলতেন- আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন, তাহলে ওই খানেই তাকে হত্যা করা হতো। আমাদের স্বাধীনতার দাবি ওই কাতালানদের মতো পালিয়ে যেতে হতো। হয় বঙ্গবন্ধুকে পালিয়ে যেতে হতো, নয় তাকে হত্যা করা হতো। তখন তিনি দেশদ্রোহীতার মামলার মধ্যে পড়ে যেতেন বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সেই আন্দোলনটাকে ধীরে ধীরে একটা পর্যায়ে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে রূপ দিলেন। নিয়ে গেলেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত। তখন ইয়াহিয়া খান ও বঙ্গবন্ধু উভয়েই নো রিটার্ন পজিশনে। তখনই ইয়াহিয়া বাঙালি নিধনে অপারেশন সার্চলাইট অনুমোদন দিলেন। আমাদের ওপর গণহত্যা চালানো হল। পাখির মতো নির্বিচারে বাঙালি হত্যা শুরু হল। তখন বঙ্গবন্ধু বললেন, আমাদের আর পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা সম্ভব না। তখন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। এটাই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর দর্শন- একটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে কিভাবে স্বাধীকার থেকে থেকে ধীরে ধীরে স্বাধীনতার আন্দোলনে নিতে হয় এবং স্বাধীন করতে হয়।

রাজনীতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজন নতুন দার্শনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। পৃথিবীর কোনো নেতা এভাবে একটি স্বাধিকারের আন্দোলনকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু সেটা করতে পেরেছিলেন।

দেশের দুর্নীতির জন্য পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলোকে দায়ী করে খালিদ মাহমুদ বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী জিয়া-এরশাদ ও খালেদার সরকারগুলো দেশের মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি, ফাঁকিবাজি ঢুকিয়ে দিয়েছে। আস্থা এবং বিশ্বাসের সঙ্কট তৈরি করে দেয়া হয়েছে। সেজন্য আমরা এগিয়ে যেতে পারিনি। আজকে সময় এসেছে। আমরা দেশরত্ন শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব পেয়েছি, যিনি পৃথিবীর সবচেয়ে পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী। আমাদের জীবন থেকে যে মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে গেছে, সে সময় তিনি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। একজন মানুষ আপ্রাণ কষ্ট করছেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য। তাদের সুখ ও শান্তির জন্য।

নিজের মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থদের আহ্বান জানিয়ে খালিদ বলেন, ৩০ লাখ শহীদ যারা স্বাধীন দেশের আলো-বাতাস কিছু পাননি, তাদের স্বপ্ন আমরা সবাই মিলে বাস্তবায়ন করব। কোনো দুর্নীতির সঙ্গে আপস নয়, অর্জনের মধ্য দিয়ে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব।

রাজনৈতিক দূরদর্শিতা থেকে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ গঠনের প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা দিলেন, অনেক নেতা তাকে ছেড়ে চলে গেল। কেউ কেউ ১১ দফা ঘোষণা করলেন, অন্যান্য জায়গায় চলে গেলেন। সেই সময় বঙ্গবন্ধু ৪৮ সালে যেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই ছাত্রলীগ এই ছয় দফার দায়িত্ব নিয়ে নিল। বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার করা হল। আড়াই বছর তাকে আটক রাখা হল। এ আড়াই বছরে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফাকে এক দফায় পরিণত করল, বঙ্গবন্ধুর গঠন করা ছাত্রলীগ।

খালিদ মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু কতটুকু দূরদর্শী ছিলেন। তিনি ৪৮ সালে যেই ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই ছাত্রলীগ ৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফাকে এক দফা না শুধু, তাকে জেল থেকে বের করে আনল এবং শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিল। সত্তরের নির্বাচনে বাংলার মানুষের ম্যান্ডেট নিয়ে তিনি একক নেতায় পরিণত হলেন। সত্তরের নির্বাচনের আগে অনেকেই নেতা- মাওলানা ভাসানী বলেন আমি নেতা, অলি আহমেদ বলেন আমি নেতা। সে সময় যারা ছিলেন সবাই নিজেকে নেতা দাবি করে বসলেন। সত্তরের নির্বাচনে বাংলার মানুষ ম্যান্ডেট দিয়ে দিল যে, বাংলাদেশের একক নেতা হচ্ছেন শেখ মুজিব। যখনই তিনি ম্যান্ডেট পেয়ে গেলেন তখন তিনি স্বাধিকার নয়, অধিকার নয়- স্বাধীনতার প্রশ্নে আস্তে আস্তে জাতিকে নিয়ে গেলেন।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর এম মাহবুব-উল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন নৌ পরবিহন সচিব মো. আবদুস সামাদ, নৌ পরবিহন অধিদফতরের মহাপরচিালক কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন আহমদে ভূইয়া, বিআইডব্লিউটিএর সদস্য গোলাম মোস্তফা, নুরুল আলম, দেলোয়ার হোসেন, পরিচালক আব্দুল আউয়াল ও সিবিএ নেতা আবুল হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৫:৪২   ১৫২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ