আজ (সোমবার) ০১লা এপ্রিল’২০১৯
এপ্রিল ফুল
১ এপ্রিল পাশ্চাত্য বিশ্বে এপ্রিল ফুলস ডে বা এপ্রিলের বোকাদের দিন হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও ১ এপ্রিলে ফ্যাশন হিসেবে এপ্রিল ফুলস ডে পালন করে কেউ কেউ। প্রিয় বা ঘনিষ্ঠজনদেরকে ঠকিয়ে তাৎক্ষণিক মজা নেয়। এপ্রিল ফুলের মর্যাদা দেয় হাসি-তামাশা করে। কিন্তু এপ্রিল ফুলস ডে’র তাৎপর্য মুসলমান বা মানব জাতির জন্যে সুখকর নয়। বিশ্বের মুসলমানদের জন্যে এটি একটি শোকের দিন। ১৪৯২ সালের এদিনে স্পেনের গ্রানাডা, কর্ডোভা, অকলোহোমাসহ বিভিন্ন নগরে সাড়ে ৭ লাখ মুসলমানকে প্রতারণার মাধ্যমে হত্যা করা হয়। তারপর থেকে পাশ্চাত্য বিশ্ব এ দিনটিকে এপ্রিল ফুলস ডে বা এপ্রিলের বোকাদের দিন হিসেবে পালন করে আসছে। মুসলমানদের সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করতে না পেরে তাদের ফসলের ক্ষেতে আগুন দিয়ে সকল শস্যভা-ার ধ্বংস করে খ্রিস্টান রাজা ফার্নিন্ডেজ ও রানী ইসাবেলার বাহিনী স্পেনের মুসলমানদের নগর অভ্যন্তরে অবরোধ করে ফেলে। কিন্তু তাতেও অবস্থার কোন উন্নতি না ঘটাতে এবং দিন দিন তাদের রসদপত্রে টান পড়াতে খ্রিস্টান বাহিনী চাতুরতার আশ্রয় নেয়। তারা ঘোষণা করে মুসলমানরা যদি যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র বিরতি করে এবং মসজিদে আশ্রয় নেয় তাহলে তাদের সাথে একটি সন্ধিতে আসা হবে। কাউকে বন্দি করা হবে না। সরল বিশ্বাসে মুসলমানগণ মসজিদে আশ্রয় নেয়। কিন্তু ১ এপ্রিল ছিল মুসলমানদের সাথে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শঠতা, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার দিন। এদিন মুসলমানদের সরলতা ও বিশ্বাসভাজনতার সুযোগ নিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায় স্পেনের গ্রানাডাসহ মসজিদের ভেতর আশ্রিত অবস্থায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, কামান দেগে ও গুলি করে হত্যা করে। অনেককে জাহাজ সমেত মধ্যসমুদ্রে ডুবিয়ে মারা হয়।
হাসান হাফিজুর রহমানের মৃত্যু
কবি সাংবাদিক হাসান হাফিজুর রহমানের আজ মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৩ সালের এই দিনে মস্কোতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নেপথ্য সংগঠক ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর তার সম্পাদনায় ১৬ খ-ে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ঃ ৩ দলিলপত্র। ৪৭-এ দেশ বিভাগের পর পূর্ব বাংলায় আধুনিক কাব্য ধারা সৃষ্টির অন্যতম স্থপতি তিনি। জনজীবনের প্রত্যাশা, যন্ত্রণা, প্রতিবাদের ভিন্নরকমের প্রকাশ ঘটেছে হাসান হাফিজুর রহমানের সাহিত্যকর্মে। ১৯৭১ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং ১৯৮৪ সালে মরণোত্তর একুশে পদক ছাড়াও আদমজী পুরস্কার, নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদকসহ অনেক সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। শেষদিকে বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে চিকিৎসার জন্যে মস্কো যান। মস্কো সেন্ট্রাল ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাসান হাফিজুর রহমানের জন্ম ১৯৩২ সালের ১৪ জুন জামালপুরে মাতুলালয়ে। ১৯৪৬ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ৪৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ, ৫১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং ৫৫ সালে এম.এ পাস করেন। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় যোদ্ধা হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম সংকলন একুশে ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। ৫৪-৫৫ তে ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন। বেগম, সওগাত, ইত্তেহাদ পত্রিকায় চাকরি করেছেন। সিকান্দার আবু জাফরের সহযোগী হিসেবে ৫৭ তে মাসিক সাহিত্যপত্র সমকাল প্রকাশ করেছেন। ওই বছরই ঢাকার জগন্নাথ কলেজে বাংলার প্রভাষক নিযুক্ত হন। ৬৪ তে চাকরিচ্যুত হয়ে আবার সাংবাদিকতা শুরু করেন। দৈনিক পয়গাম, দৈনিক পাকিস্তানে চাকরি করেন। স্বাধীনতার পর দৈনিক পাকিস্তান দৈনিক বাংলায় পরিবর্তিত হলে তিনি এর সম্পাদকম-লীর সভাপতি নিযুক্ত হন। মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস কাউন্সিলারও ছিলেন কিছুদিন । তার প্রকাশিত কবিতা গ্রন্থের মধ্যে বিমুখ প্রান্তর, আর্ত শব্দাবলী, অন্তিম শরের মতো, যখন উদ্যত সঙ্গন, শোকার্ত তরবারী, প্রবন্ধের মধ্যে আধুনিক কবি ও কবিতা, মূল্যবোধের জন্যে, সাহিত্য প্রসঙ্গ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
১৯৪৫ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের ওকিনওয়া দ্বীপে আগ্রাসন শুরু করে। এ আগ্রাসন চালাতে যেয়ে ১১৬ টি বিমান ধ্বংস হয় ও তিনটি বিমানবাহী জাহাজের ক্ষতি হয়। শেষ পর্যন্ত ৫০ হাজার মার্কিন সৈন্য ওকিনওয়া দ্বীপে অবতরণ করে। এই হামলায় ১৩ শ মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ এবং দশ হাজার জংগি বিমান অংশ গ্রহণ করেছিলো। মার্কিন বাহিনী ওকিনওয়ার দুইটি জাপানি বিমান ঘাঁটি দখল করে নেয় এবং তারা প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার জাপানি সৈন্যের মোকাবেলা করে। জাপানী বাহিনী দ্রুত রণ কৌশল পরিবর্তন করে মার্কিন বাহিনীকে হতচকিত করে দেয়। উপকূলে মার্কিন বাহিনীকে মোকাবেলা করার বদলে তারা তাদেরকে ভেতরের দিকে টেনে নেয়। এই যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর ১২ হাজারেও বেশি নিহত এবং ৫০ হাজারের বেশি আহত হয়েছিলো। অপর দিকে জাপানের পক্ষে হতাহতের সংখ্যা এক সতর হাজার হয়েছিলো। জাপানের সেনাবাহিনী শেষ পর্যন্ত আত্ম সমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিলো। সে সময় ঐতিহ্য অনুযায়ী ওকিনওয়ায় জাপানের সেনা প্রধান লেফট্যান্ট জেনারেল উশিজিমা হারিকিরি অর্থাৎ জাপানের কায়দায় আত্মহত্যা করেন।
১৫৭৮ সালের এ দিনে বৃটিশ চিকিৎসা বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্ভে জন্মগ্রহণ করেন। মানব দেহের রক্ত সংবহনের প্রকৃতি এবং রক্ত সংবহনের কাজে হৃৎপিন্ডের ভূমিকা তিনিই প্রথম বের করেন। গ্রিকো রোমান যুগের চিকিৎসা বিজ্ঞানী গ্যালেনের কাল থেকে অর্থাৎ উইলিয়াম হার্ভের প্রায় ১৪০০ বছর পূর্ব থেকে রক্তসংবহন তন্ত্র এবং হৃৎপিন্তের ভূমিকা নিয়ে মানুষের জ্ঞান একই জায়গায় আটকে ছিলো। হার্ভে এ ক্ষেত্রে নতুন এক পথ নির্দেশ করেন। এ ছাড়া জীব বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গবেষণার প্রকৃতি কি হবে সে ব্যাপারে তিনি দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
১৯৬০ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের কেপ কেনেডি থেকে প্রথম উপগ্রহ স্যাটেলাইট টিরোস ওয়ান উৎক্ষেপণ করা হয় এবং এটি মহাকাশ থেকে প্রথম টেলিভিশন চিত্র প্রেরণ করে। টেলিভিশন ইনফ্রারেড অবজারভেশন স্যাটেলাইট শব্দ থেকে টিরোস নামটি নেয়া হয়েছে। পৃথিবীর আবহ মন্ডল সহ নানা অনুসন্ধানের কাজে উপগ্রহ ব্যবহার করা যায় কিনা তাই পরীক্ষা করে দেখার জন্য নাসা এই উপগ্রহ প্রেরণ করেছিলো। তবে পরে এ ধরণের আরো কয়েকটা উপগ্রহ প্রেরণ করা হয়েছিলো।
১৮০৯ সালের এ দিনে রাশিয়ার খ্যাতনাম সাহিত্যিক নিকলাই ভাসিলিয়েভিচ গোগল জম্ম গ্রহণ করেন। রুশ লেখক হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি মূলত ইউক্রেনীযয় বংশোদ্ভূত। তাঁর অনেক লেখাতেই তাঁর ইউক্রেনীয় সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে, তবে তিনি রুশ ভাষায় সাহিত্য রচনা করেছেন। কেউ কেউ তাকে আধুনিক রাশিয়ার প্রথম বাস্তববাদী লেখক হিসেবে মনে করেন। এবং রুশ জীবন যাত্রাকে প্রথম যারা সমালোচনা করেছেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। গোগলের সবচেয়েনামকরা রচনা হল মৃত আত্মা বা উবধফ ঝড়ঁষং। যাকে আধুনিক রুশ উপন্যাসের পথিকৃত বলে গন্য করা হয়। এ ছাড়া ডায়রি অব এ ম্যাড ম্যান, দি নোজ এবং দি ওভার কোটকে তার লেখা সেরা ছোট গল্প হিসেবে গণ্য করা হয়। খ্যাতনামা এই সাহিত্যিক ১৮৫২ সালে ৪ মার্চ পরলোকগমন করেন।
১৯৭৯ সাল থেকে প্রতিবছর ইরানে এ দিনটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রূপকার ইমাম খোমেনী(রহ)এর নির্দেশে ইসলামী বিপ্লবের বিজয়ের পর ইরানের শাসন ব্যবস্থা কি হবে তা নিয়ে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ইরানের জনগণ সে গণভোটে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পক্ষে ৯৮ দশমিক দুই শতাংশ ভোট দিয়েছিলো। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের ব্যাপারে যাদের বিরোধিতা ছিলো এ দুই দিন ব্যাপী এ গণভোটের মাধ্যমে তাদের যে বিরোধিতাকে জনগণ সরাসরি প্রত্যাখান করেছিলো। একই সাথে গণতান্ত্রিক এক ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণ শাসনব্যবস্থা কি হবে তার কথা বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছিলো।
রক্ত সঞ্চালন পদ্ধতির অন্যতম উদ্ভাবক ডা: উইলিয়াম হর্ডের জন্ম (১৫৭৮)
ভারতে আয়কর চালু (১৮৬৯)
কলকাতা যাদুঘর প্রতিষ্ঠিত (১৮৭৮)
ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে নয়াদিল্লীতে স্থানান্তর (১৯১২)
করি আবদুল হাই মাশরেকীর জন্ম (১৯১৯)
ভারত শাসন আইন অনুযায়ী প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত (১৯৩৭)
স্পেনে গৃহযুদ্ধের অবসান (১৯৩৯)
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বে প্রথম আবহাওয়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ (১৯৬০)
আয়াতুল্লাহ খোমেনি কর্তৃক ইরানকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা (১৯৭৯)
প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হ্রাস করে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিল পাস (১৯৯৭)
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা উপলক্ষে জাতিসংঘের স্টাফদের জন্য ২ দিনের ছুটি বাধ্যতামূলক করে (১৯৯৮)
বাংলাদেশ সময়: ১৪:২০:৪৪ ২৩৭ বার পঠিত