
নৌ-যোগাযোগে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরো গভীর হবে বলে জানিয়েছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। বাংলাদেশ থেকে কলকাতা এবং কলকাতা থেকে বাংলাদেশ দুটি জাহাজ কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়া চলাচল করেছে। আমরা এতে সন্তুষ্ট।’
খালিদ বলেন, ‘আগামীতে আরো অত্যাধুনিক ক্রুজ যাতে এতে সম্পৃক্ত হয় সেটা নিয়ে পরিকল্পনা করা হবে। পরীক্ষামূলক জাহাজ চলাচলে আমরা সফল হয়েছি। এবার বাণিজ্যিকভাবে দুই দেশে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পাগলা মেরি এন্ডারসনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বিকেল ৫টায় ভারতের কলকাতা থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ আর ভি বেঙ্গল গঙ্গা মেরি এন্ডারসনে পৌঁছুলে সেখানে থাকা পর্যটকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নৌ পথে ক্রুজ সার্ভিস চালু হওয়ার পর সেই সম্পর্ক আরো গভীর হচ্ছে। নৌ পথে যাত্রা একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ভালো একটি সূচনা হয়েছে ভ্রমণের। যারা ক্রুজ যাত্রা পছন্দ করে তারা ভারতে যাতায়াত করবে। এটাকে আমাদের নিয়মিত করতে হবে। ইতোমধ্যে ভিসা প্রদানও বেশ সহজ হয়েছে।’

মেরি এন্ডারসনে আসা ভারতের জাহাজটিতে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইতালি ও অষ্ট্রেলিয়ার ছয়জন পর্যটকসহ ১৯ জন যাত্রী ও ৩০ জন ক্রু ছিল। এদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া দীপক বড়ুয়া, ইন্ডিয়া ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (আইডব্লিউআই) সাবেক চেয়ারম্যান নোটন গুহ বিশ্বাস, আর ভি বেঙ্গল গঙ্গার চেয়ারম্যান রাজ সিংসহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীও রয়েছেন।
গত ২৯ মার্চ দুপুর সাড়ে বারোটায় ভারতের কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে জাহাজটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সুন্দরবন হয়ে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় খুলনার আংটিহারা বন্দরে জাহাজটি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর মংলা, বরিশাল ও চাঁদপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জে এসে নোঙর করে। শনিবার সকালে পর্যটকেরা সোনারগাঁয়ের জাদুঘর, বড় সরদার বাড়ি, পানামনগরী, জামদানী পল্লীসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন।
ভারত থেকে বাংলাদেশে নৌ-পথের এই ভ্রমনকে আনন্দদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণ হিসেবে উল্লেখ করে বিদেশী পর্যটকরা জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তাদেরকে মুগ্ধ করেছে। এই ভ্রমন তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে এবং এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উত্তরোত্তর সাফল্যও কামনা করেন তারা।
এর আগে গত ২৯ মার্চ ৬১ জন পর্যটক সহ ১৩৭ জনের প্রথম বহর নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যায় এমবি মধুমতি। পাগলায় মেরি এন্ডারসনের ভিআইপি ঘাট থেকে ওই জাহাজ ছেড়ে ৩১ মার্চ দুপুরে কলকাতা পৌছায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১:১৯:১৬ ২৫৩ বার পঠিত