
নারায়ণগঞ্জে মাদক ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের হুঙ্কার, আইন শৃংখলা বাহিনীর অব্যহত বিশেষ অভিযান সব মিলিয়ে মাদক ব্যাবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্কে বিরাজ করছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন হারুন-অর-রশিদ(বিপিএম-বার, পিপিএম-বার)। নির্বাচনী দায়ীত্ব সুষ্ঠভাবে পালন করে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। নির্বাচনের পর থেকে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ভুমিকা পালনের জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দেন পুলিশ সুপার হারুন অর-রশিদ।
জেলা আইনশৃংখলা সভা, বিভিন্ন মত বিনিময় সভা, পুলিশ ও জনতার মুখোমুখি সমাবেশ ওপেন হাউজ ডে সহ সকল সমাবেশে মাদক ব্যবসায়ীদের দেশ ও জাতির শত্রু উল্লেখ করে তাদের সাথে কোন আপোষ না করার নির্দেশনা দেন পুলিশ সুপার। এরই মধ্যে পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলার প্রতিটি থানা এলাকায় তালিকাভুক্ত মাদক ব্যাবসায়ীদের ধরতে সাড়াশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ সহ সকল আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।
প্রায় প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক ব্যাবসায়ীদের গ্রেফতার করছে পুলিশ, উদ্ধার করছে বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্য। প্রতিটি থানাতেই বাড়ছে মাদক মামলার জট। মাদকের বিরুদ্ধে কোন আপোস নয় এবং যে দলেরই হোক মাদক ব্যবসায়ীদের কোন ছাড় নয় কিংবা মাদকের সাথে জড়িত এমন কারো পক্ষে কেউ তদ্ভির করলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর হওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ।
পুলিশ সুপারের এমন নির্দেশনা নিয়ে মাদক নির্মূলে মাঠে নেমেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। পুলিশ সুপারের হুংকারে নারায়ণগঞ্জের মাদক ব্যাবসায়ীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জেলার নামকরা চিহ্নিত মাদক ব্যাবসায়ীরা জেলা ছেড়ে অনত্র পলিয়ে বেড়াচ্ছে, কেউ কেউ আবার মাদক সহ গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে বের হতেও অনিহা প্রকাশ করছে। কোন কোন মাদক ব্যাবসায়ী আবার মাদক ব্যাবসা ছেড়ে সুস্থ জীবনে ফিরে আসার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে কয়েক জন মাদক ব্যাবসায়ী, যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদক মামলা এবং জেল খেটেছেন অনেকবার এমন কয়েক জন মাদক ব্যাবসায়ী সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে এবং আর কোন দিন মাদক ব্যবসা করবেনা মর্মে অঙ্গীকার করে স্থানীয় থানা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দপ্তরে আবেদন জানিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদের মধ্যে কেউ কেউ এলাকার স্থানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের মাধ্যমেও মাদক ব্যাবসা ছেড়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে সুস্থ জীবনে ফিরে আসার জন্য পুলিশ সুপারের সহযোগীতা চেয়ে আবেদন করেছে এবং অবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অনেকেই।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলায় একটি বহুল পরিচিত অভিজাত ভাসমান রেস্তোরা মেরি এন্ডারসনে” অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্য উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সাথে ৬৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মরি এন্ডারসন রেস্তোরার নাম করে অবাদে চলত মাদক ব্যবসা।
দীর্ঘ দিন ধরে বার হিসেবে জানত এলাকাবাসী। তবে পুলিশের অভিযানের পর বেড়িয়ে আসে ভিন্ন চিত্র। বেড়িয়ে আসে রেস্তোরার নাম করে মাদক ব্যবসার ভয়ংকর সব তথ্য। আলোচনায় আসে নারায়ণগঞ্জের এক প্রভাবশালী নেতার আত্বীয় ও প্রভাবশালী এক ব্যাবসায়ী জড়িত থাকার কথা। তবে যত প্রভাবশালীই হোক মাদকের বিষয়ে জড়িত থাকলে কাউকে কোন ছাড় নয়” এমন সাফ জানিয়ে দেন পুলিশ সুপার হারুন আর রশিদ।
বিষয়টি নারায়ণগঞ্জের ব্যাবসায়ীক ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। তবুও পুলিশ সুপার মাদকের বিয়য়ে কঠোরতা অবলম্বন করেই এগিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে আরও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মাদক ব্যাবসায়ীদের মধ্যে। পুলিশ সুপার ঘোষণা দিয়েছেন শুধু মাদক নয়, তেল চুরি, বালু সন্ত্রাসী, ভূমি দস্যূ যত প্রভাবশালীই হোক তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবেনা।
সব মিলিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপাররের এমন কঠোর অবস্থানকে মাদক ব্যাবসায়ীরা আতঙ্ক হিসেবে গ্রহন করলেও সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ২১:০৪:৪৬ ১৯৬ বার পঠিত