আজ (রোববার ) ১৬ জুন ২০১৯
(সংবাদপত্রের কৃষ্ণ দিবস)
১৬ জুন বাংলাদেশের সংবাদপত্রসেবীদের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য দিন। বড় বেদনার দিন এটি । ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন তৎকালীন সরকার দেশের ৪টি ছাড়া সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ অবজারভার, বাংলাদেশ টাইমস, দৈনিক বাংলা ও দৈনিক ইত্তেফাক-এই চারটি দৈনিক পত্রিকা সরকার অধিগ্রহণ করে এবং দি গভর্নমেন্ট এন্ড নিউজ পেপার (ম্যানেজমেন্ট) অ্যাক্ট ১৯৭৫;-এর মাধ্যমে একটি পরিচালনা বোর্ড গঠন করে। এ পরিচালনা বোর্ডে নিয়োগ করা হয় দলীয় লোক। ফলে শত শত সাংবাদিক-কর্মচারী পেশাচ্যুত ও কর্মহীন হয়ে পড়েন। পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মতামত প্রকাশের বাহন সংবাদপত্র নির্মুল এবং সাংবাদিক নির্যাতনের এই কালো অধ্যায়ের অবসন ঘটে। ১৬ জুনের ঘটনা সংবাদপত্রসেবীরা ভোলেনি। ১৯৭৬ সাল থেকে সাংবাদিক ইউনিয়ন সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবছর ১৬ জুনকে পালন করে সংবাদপত্রের কালো দিবস হিসেবে । রাজনৈতিকভাবেও দিবসটি তাৎপর্য বহন করে ।
(রামকৃষ্ণের ইহলোক ত্যাগ)
১৮৮৬ সালের এই দিনে লোকান্তরিত হন ধর্মসাধক পরমহংসদেব রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব। তার বাল্যনাম গদাধর। বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে অনুশীলনের ফলে হিন্দু ধর্ম ছাড়াও ইসলাম, খ্রিস্ট, বৌদ্ধ, শিখ প্রভৃতি ধর্মের সঙ্গে তার নিবিড় পরিচয় ঘটে। শক্তির উপাসনা রামকৃষ্ণের ধর্মমতের মূলকথা। ধর্ম সম্পর্কে তার ব্যাখ্যাসব ধর্মই সত্য। যত মত তত পথ। কর্মগুণে রামকৃষ্ণ নিজেই একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন। তার দেশী-বিদেশী ভক্তকূল কর্তৃক রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা- এ কথাই প্রমাণ করে। মূর্তিগড়া, ছবি আঁকা এবং অভিনয়েও পারদশী ছিলেন তিনি। রামকষ্ণের জন্ম ১৮৩৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে। ১৮৫৫ সালে তিনি রানী রাসমনি নির্মিত দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ির পুরোহিত নিযুক্ত হন। সেখানে কালী সাধনায় সিদ্ধি লাভ হয় তার। ২৩ বছর বয়সে তিনি ৬ বছর বয়স্কা সারদামনিকে বিয়ে করেন । সেটা ছিলো নামে মাত্র বিয়ে । তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক হয়নি কোনোদিন । ১৯ বছর বয়সে যখন সারদামনি দক্ষিণেশ্বরে আসেন রামকৃষ্ণ তখন তাকে সাক্ষাৎ জগদম্বা-জ্ঞানে পূজা করেন। আজীবন সরল অনাড়ম্বর জীবন অতিবাহিত করেছেন তিনি। অতি প্রাঞ্জলভাবে ব্যাখ্যা করতেন ধর্মের জটিল ও গভীর বিষয়গুলোকে স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন তার অতি প্রিয় শিষ্য। অন্যান্য শিষ্যদের মধ্যে শিবনাথ শাস্ত্রী, কেশব চন্দ্র সেন, গিরিশচন্দ্র ঘোষ অন্যতম।
(দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের মৃত্যু)
১৯২৫ সালের এই দিনে দার্জিলিংয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশবন্ধু খ্যাত চিত্তরঞ্জন দাশ। এ দেশের ক্ষণজন্মা খ্যাতিমান রাজনীতিক, আইনবিদ তিনি। তার জন্ম ১৮৭০ সালের ৫ নভেম্বর কলকাতার পটলডাঙ্গায়। পৈতৃক নিবাস বিক্রমপুরের তেলিরবাগে। ১৮৯৩ সালে মিডল টেম্পল থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে দেশে ফিরে আইন ব্যবসা শুরু করেন । অল্প সময়ের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের একজন খ্যাতিমান আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। ১৯০৫ সালে যোগ দেন স্বদেশী আন্দোলনে। ১৯০৬ সালে বরিশাল প্রাদেশিক সম্মেলনের প্রস্তাব রচয়িতা তিনি। ১৯২০ সালে কলকাতায় কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে গান্ধীর অসহযোগ নীতির বিরোধিতায় নতুন করে আলোচনায় আসেন। পরে মত পরিবর্তন করে গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন এবং ব্যারিস্টারিতে ইস্তফা দেন । বঙ্গদেশের অসহযোগ আন্দোরনে নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষতার সঙ্গে। ভারত সরকার কর্তৃক প্রখ্যাত মিউনিশন্স বোর্ড গঠিত মোকদ্দমায় প্রচলিত নিয়ম উপেক্ষা করে সেতাঙ্গ এ্যাড. জেনারেল অপেক্ষা অধিক পারিশ্রমিকের অফার তিনি ফিরিয়ে দেন অসহযোগ আন্দোলনের স্বার্থে। এ অসামান্য ত্যাগের জন্যে বাংলার জনগণ তাকে দেশবন্ধু উপাধি দেয়। ১৯২৩ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করে মতিলাল নেহরুর সহযোগিতায় গঠন করেন স্বরাজ্য দল। অল্প সময়ে এ দলটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। যা কংগ্রেসের জন্য হুমকি হয়ে দাড়ায় । অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ বন্ধু হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি রক্ষার্থে মুসলমান নেতাদের সাথে বেঙ্গল প্যাক্ট চুক্তি সম্পাদন করেন। কলকাতা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে চাকরির ক্ষেত্রে অবহেলিত মুসলমানদের অধিক হারে চাকরি দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছিলেন। হিন্দু-মুসলমানের ঐক্য এবং ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জনই ছিলো তার মূল দর্শন। কবি হিসেবেও প্রসিদ্ধি পেয়েছেন। বিখ্যাত মাসিক সাহিত্য পত্রিকা নারায়ণ সম্পাদনা করতেন তিনি। কবি রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে পত্রিকাটিতে অনেক লেখালেখি করেছেন। মালঞ্চ, মালা, সাগর সঙ্গীত তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।
১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বৃটেনের বিখ্যাত রসায়নবিদ ও পদার্থ বিজ্ঞানী জোসেফ প্রিষ্টলি “ফিল্ড হেল্ড” শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এমন এক যুগে বাস করতেন যাতে বলা হতো রসায়নের সোনালী যুগ। কারণ ঐ যুগে রসায়ন বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছিল। বৃটিশ এই বিজ্ঞানী গবেষণা করে উদ্ভিদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সহস্য এবং অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন গ্যাস আবিষ্কার করেন। জোসেফ প্রিষ্টলি ১৮০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৪৪ খ্রীষ্টাব্দের এই দিনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে মার্কিন বিমান বাহিনী জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় ফুকুলা শহরে হামলা শুরু করে। টোকিওকে আত্মসমর্পনে বাধ্য করার জন্যই ঐ হামলা চালানো হয়েছিল। জাপানের বিভিন্ন শহরে মার্কিন ঐ বিমান হামলায় বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছিল এবং অসংখ্য কারখানা ও ক্ষেতখামার বিনষ্ট হয়েছিল। এরপর ১৯৪৫ সালের আগষ্ট মাসে জাপানের নাগাসাকি ও হিরোশিমা শহরে পরমাণু বোমা নিক্ষেপের মাধ্যমে ঐ যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
১৯৬৩ খ্রীষ্টাব্দের এই দিনে রাশিয়া থেকে বিশ্বের প্রথম মহিলা নভোচারী ভ্যালেন্টিনা টেরেসকোভা মহাকাশ পাড়ি দেয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। তিনি যখন কক্ষ পথে অবস্থান করছিলেন তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের আরেক নভোচারী বায়কোভোস্কি পৃথিবীর চারিদিকে ভ্রমণে ব্যস্ত ছিলেন। বিশ্বের প্রথম পুরুষ নভোচারী ইউরি গ্যাগারিন মহাকাশ সফরের দুই বছর পর ভ্যালেন্টিনা টেরেসকোভা মহাকাশ সফরে যান। তিনি ৭০ ঘন্টা ৫০ মিনিটে ৪৭ বার পৃথিবী প্রদক্ষীণ করেন।
ফার্সী ১৩৫৮ সালের খোরদাদ মাসের এই দিনে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ইমাম খোমেনী (র:) স্বনির্ভরতা অর্জন এবং দারিদ্র্য দূর করার জন্য ইরানে পুনর্গঠন ও কৃষি উন্নয়ন আন্দোলন বা জেহাদে স’যান্দেগি বিভাগ গঠনের কথা ঘোষণা করেন। ইমাম খোমেনী (র:) এর এই ঘোষণার পর সমাজের বঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের উন্নতির জন্য দেশের সকল স্তরের জনগণ বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ এগিয়ে আসে। ইমাম খোমেনী (র:) এর এই ঘোষণা মূলত ইসলামী বিপ্লবের চেতনা থেকেই উৎসারিত এবং তার এ পদক্ষেপ সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের ভাগ্য উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখে। তাছাড়া দীর্ঘ আট বছরের প্রতিরক্ষা যুদ্ধেও ইরানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জেহাদে স’যান্দেগি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল। একই সাথে ইরানসহ তানজানিয়া, ঘানা, জিম্বাবুয়ের মত আফ্রিকা মহাদেশের আরো কয়েকটি দেশে গ্রামীন শিল্প, কৃষি, পশু পালন, বাধ নির্মান প্রভৃতি ক্ষেত্রেও জেহাদে স’যান্দেগির ভূমিকা অনস্বিকার্য।
হিজরী ৬৪৩ সালের এই দিনে মিশরের বিখ্যাত ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ, ভাষাবিদ ও মোফাস্সিরে কোরআন আবুল হাসান আলী বিন আব্দুস সামাদ শাফেঈ পরলোক গমন করেন। তিনি মিশরের সাখা এলাকায় জন্ম গ্রহণ করেন এবং এ জন্য তিনি সাখাভি নামে পরিচিত। জ্ঞানার্জনের জন্য তিনি সিরিয়া গমন করেন এবং দামেস্কেই বসবাস শুরু করেন। তার রচিত কয়েকটি বইয়ের মধ্যে জাওয়াহের বা অলঙ্কার এবং সাফার আস্ব্ সায়াদাহ উল্লেখযোগ্য।
ইতিহাসের এই দিনে সংঘটিত আরো কিছু উল্লেখ্যযোগ্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে জার্মানীর সাধারণ নির্বাচনে সমাজতান্ত্রিক পার্টি জয় লাভ করে।
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে এক নায়ক বাকশাল সরকার কর্তৃক সংবাদপত্র ব্যবস্থাপনা আদেশ জারি করা হয় এবং চারটি দৈনিক পত্রিকা ও ১২৪ টি সাময়িকী ব্যতীত সকল পত্র পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়।
উন্মুল মোমেনিন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ)-এর ইন্তেকাল (৬৭৯)
নবাব সিরাজুদ্দৌলার কাশিম বাজার কুঠি দখল (১৭৫৬)
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্পেন-ফ্রান্সের যুদ্ধ ঘোষণা (১৭৭৯)
দুনীতির অভিযোগে ঘানার প্রাক্তন সামরিক শাসক জেনারেল অচিয়ামকে মৃত্যুদ- প্রদান (১৭৭৯)
ভারতের কচ্ছ জনপদে সপ্তাহব্যাপী ভূমিকম্প শুরু (১৮১৯)
অবিভক্ত বাংলায় ইংরেজি শিক্ষার অগ্রদূত, বহুভাষাবিদ প-িত ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু (১৮৯৩)
ইন্টারন্যাশনাল ওলিম্পিক কমিটি প্রতিষ্ঠিত (১৮৯৪)
লন্ডনে লীগ অব নেশন কাউন্সিলের প্রথম জনসভা (১৯২০)
ইংল্যান্ডের প্রথম মহিলা কেবিনেট মন্ত্রী মার্গারেট বন্ডফিল্ডের মৃত্যু (১৯৫৩)
হাঙ্গেরীর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরে নগরের মৃত্যুদ- কার্যকর (১৯৫৮)
বিশ্বের প্রথম মহিলা নভোচারী রাশিয়ার ভেলেনতিনা তেরেশকোভার মহাশূন্য প্রদক্ষিণ শুরু (১৯৬৩)
লেওনিদ ব্রেঝনেভ সোভিয়েত রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত (১৯৭৭)
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৩:২৯ ১৩০ বার পঠিত