
চীনের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের আওয়াজ জোরেশোরে ও পরিষ্কারভাবে হওয়া উচিত বলে বুধবার মন্তব্য করেছেন নেতৃস্থানীয় চীনা বিশেষজ্ঞ ড. রুয়ান জংজি। চায়না ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিআইআইএস) নির্বাহী সহ-সভাপতি ড. জংজি বলেন, ‘বাংলাদেশের দায়িত্ব হলো নিজেদের চীনে তুলে ধরা। বাংলাদেশের কথা চীনে শোনানো হোক। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
রাজধানীর কসমস সেন্টারে ‘সমসাময়িক বিশ্বে চীনের ভূমিকা’ শীর্ষক কসমস সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (আইএসএএস) প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও কসমস ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান- কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন কসমস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান। সাবেক সচিব ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী ও মো. তৌহিদ হোসেনসহ আরও অনেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি নির্ধারণে ভূমিকা পালন করা ড. জংজি বলেন, চীন ও বাংলাদেশকে দুটি বিষয় একসাথে করা উচিত- বর্তমান সম্পর্ক শক্তিশালী করা এবং মূল বিষয়গুলোতে আরও সহযোগিতা আনা।
ড. জংজি বলেন, ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের রূপকল্প খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং বাংলাদেশ কী হতে যাচ্ছে তা বুঝতে খুব সহায়ক। ‘দেশটির (উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে) আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ এখন সঠিক পথে আছে এবং দেশটি একটি ভালো ভবিষ্যতের দাবিদার। তিনি দুই দেশের মধ্যে তৃণমূল-পর্যায়ে আরও সম্পৃক্ততার ওপর জোর দেন।
এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) অর্থনৈতিক করিডোর ও তার দ্রুত বাস্তবায়ন, জিনজিয়াং প্রদেশের মুসলিমদের নিয়ে উদ্বেগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর এবং তার মতে আগামীতে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হতে যাওয়া চীন-ভারত সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন।
সংলাপে ড. ইফতেখার বলেন, বিআরআই সম্ভবত চীনা স্বপ্ন থেকে প্রবাহিত এবং এটি চীনের প্রাচীন বাণিজ্য পথকে পুনরুজ্জীবিত করার ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও ভৌগলিক প্রতিশ্রুতি। উন্নয়নশীল বিশ্ব বিআরআইয়ের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের উন্নতির ধাপে তুলে ধরতে এবং ভাগ্য উন্নয়নে চীনের প্রচেষ্টার জন্য দেশটিকে সাধুবাদ জানায়। ‘চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতা তার একটি প্রমাণ। বিআরআই সমস্যামুক্ত নয় এবং অনেক অংশীদার ক্রমবর্ধমান ঋণের বিষয়টি নিয়ে ভীত। শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি এবং তা সমাধানে চীনের কৃতিত্বও উল্লেখ করেন ড. ইফতেখার।
কসমস গ্রুপের চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ খান বলেন, ‘বিশাল অঞ্চল, প্রচুর সম্পদ, জনসংখ্যার আকার ও যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ অর্থনীতির কারণে বিশ্ব মঞ্চে চীনের প্রভাব ও প্রতিপত্তির বিস্তার আরও বৃদ্ধি পাওয়া নিয়তি হয়ে আছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায্য ও পক্ষপাতশূন্য সমাজ বিনির্মাণে চীনের বেশিরভাগ অর্থনৈতিক অর্জন একবারে নিচের স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।’
তার মতে, পরিবেশ রক্ষা ও গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি দেয়া চীন অন্য দেশের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে বিশ্বের নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুপারপাওয়ারে পরিণত হয়েছে। ইউএনবি।
বাংলাদেশ সময়: ২২:১৭:৪৬ ১৪৮ বার পঠিত