প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া জানিয়েছেন, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো ভারসাম্যহীন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় জননিরাপত্তায় তার প্রভাব পড়ছে।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের সামনে বলেন, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোটি ভারসাম্যহীন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, নিবিড় তদারকিসহ সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে জননিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে।
প্রধানমন্ত্রীকে তিনি আরও বলেন, একই পদে এক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে তার কাজেও সেটার যে প্রভাব পড়ে।
প্রশাসনের অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসের তুলনায় পুলিশে গ্রেড ওয়ান ও টু কর্মকর্তা তুলনামূলক অনেক কম থাকার কথাও বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে এক দশমিক ১৭ থেকে চার দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রেড ওয়ানসহ পাঁচ শতাংশ থেকে দশ শতাংশ গ্রেড টু পদ রয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশ পুলিশ এদিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। পুলিশ বাহিনীতে ক্যাডার পদ রয়েছে ২ হাজার ২৮৯টি। যার মধ্যে, মাত্র দুটি গ্রেড ওয়ান এবং ১৩টি গ্রেড টু পদ রয়েছে।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আপনার নির্দেশিত পাঁচটি গ্রেড ওয়ান পদের বিপরীতে দুটি পদ সৃষ্টি হলেও বাকি তিনটি পদ এখনও সৃষ্টি হয়নি। গত পুলিশ সপ্তাহে আপনি এখানে বসেই সুষ্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বাকি তিনটি পদ সৃজনের জন্য। এখনও তা হয়নি।
তিনি বলেন, সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধু শূন্য পদ না থাকার কারণে ২৭ থেকে ৩০ বছর দক্ষতার সাথে পেশাদারিত্ব দায়িত্ব পালন করার পরও শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেড থ্রি অর্থাৎ ডিআইজি ও গ্রেড ফোর অর্থাৎ অ্যাডিশনাল পদে আটকে আছে। এরমধ্যে, অনেকে আছেন; আমিসহ যারা একেবারে অবসরের দ্বারপ্রান্তে, শুধু পদ না থাকার জন্য আমরা অ্যাডিশনাল আইজি পদ পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, আপনার সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত ও পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলেই ২০১৩ সালের হেফাজতি তাণ্ডব, ১৪ ও ১৫ সালের নজিরবিহীন বোমা সন্ত্রাস এবং ১৬ ও ১৭ সালে জীবনবাজি রেখে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোরভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছি।
অনুষ্ঠানে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মুনীরুজ্জামান সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে আধুনিক সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ছোট হলেও পুলিশের একটি এভিয়েশন উইং গঠনের প্রয়োজন।জঙ্গিবাদের জড়িতদের ৮২ শতাংশ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পৃক্ত হচ্ছে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আলী হোসেন বলেন, কোর্ট পুলিশের সদস্যরা সত্যিকার বলতে এখনও অবহেলিত। কোর্ট পুলিশের জন্য আলাদা ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৪১:৫৮ ৩২৩ বার পঠিত