
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল হত্যার দুই বছর আট মাস পর এই মামলার চূড়ান্ত অভিযোগ পত্র গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাইবান্ধা ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনর্চাজ) ও সহকারি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিনিয়র বিচারিক হাকিম পার্থ ভদ্রের গোবিন্দগঞ্জের জুডিশিয়াল আদালতে এই চূড়ান্ত অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।
এতে গোবিন্দগঞ্জের সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহম্মেদ, একই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহ আলম ও আইয়ুব আলী এবং চিনিকলের (জিএম-অর্থ) নাজমুল হুদাসহ ৯০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত এই মামলায় ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া সাঁওতালদের লুট হওয়া কিছু ঢেউটিন ও মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাঁওতাল ও বাঙালিদের এক হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জস্থ রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তোলে। কিন্তু চিনিকল কর্তৃপক্ষ ওইসব জমি লিজ দিলে তাতে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। ফলে ২০১৫ সালে সাঁওতাল ও স্থানীয় কিছু বাঙ্গালি অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে তাদের পূর্বপুরুষদের জমি ফেরত পেতে আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই খামারের কিছু এলাকায় তারা চারটি বড় বসতি স্থাপন করে। পরে একই বছরের ৬ নভেম্বর ওই খামারের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৯ জন পুলিশ সদস্য তীরবিদ্ধ ও চার জন সাঁওতাল গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিন জন সাঁওতাল মারা যান। পরবর্তীতে পুলিশ এক অভিযানে ওই বসতি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে।
এইসব ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষে স্বপন মুরমু বাদি হয়ে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলা করেন। পরে ২৬ নভেম্বর থোমাস হেমরম বাদি হয়ে সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহম্মেদসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আরেকটি মামলা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৪:৩১ ১৬০ বার পঠিত