মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ইন্দোনেশিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো দুইদিনের সফরে শনিবার বিকালে ঢাকায় পৌঁছানোর পরর সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে তার সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
ইন্দোনেশিয়ার ফার্স্ট লেডি ইরিয়ানা জোকো উইদোদোও এ সফরের রয়েছেন। উইদোদো দম্পতি সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও তার স্ত্রী রাশিদা খানম তাদেরকে অভ্যর্থনা জানান। পরে ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠকে বসেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এই কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা।
তিনি রোহিঙ্গা বিষয়ে সমর্থনের জন্য ইন্দোনেশিয়ার প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের তাদের আবাস্থল মিয়ানমারে রাখাইনে সন্মানজনক প্রত্যাবাসন চায় উল্লেখ করে আবদুল হামিদ এ বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার সহযোগিতা চান। রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গাদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার মানবিক সহায়তা এবং এই সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য জাতিসংঘে দেশটির ভূমিকার প্রশংসা করেন।
প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন আরও বলেন, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আশা করেন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি ফলপ্রসূ হবে এবং তারা সম্মানের সঙ্গে নিজ দেশে ফিরতে পারবে।
উইদোদো বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসাও করেন বলে জানান প্রেস সচিব। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন জানানো এবং স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ইন্দোনেশিয়ার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইন্দোনেশিয়ার স্থপতি সুকর্নের মধ্যকার সখ্যের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। দুটি দেশই ধর্মীয়, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগত দিক থেকে একই ধরনের মূল্যবোধ ধারণ করে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আশা করেন, এর ফলে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও প্রগতির সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হবে।
জোকো উইদোদোর এই সফরের মাধ্যমে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে বলেও আশা করেন আবদুল হামিদ। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
পরে আবদুল হামিদের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া, মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্যসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামারিক কর্মকর্তা নৈশভোজে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫০:৩৫ ২৮১ বার পঠিত