
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে জানিয়েছেন ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার পর নিজ কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের সামনে হাজির হয়ে একথা বলেন ভিসি।
এ সময় শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত হলেও সব ক্ষমতা নিজের হাতে নেই বলে জানান ভিসি।
আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের ভিসি বলেন, আবরার হত্যায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে বহিষ্কার করা হবে। আমি শিক্ষা উপমন্ত্রীর সঙ্গে তোমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেছি।
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।
সামনে এসেই শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন ভিসি। এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভিসি বলেন, তোমরা যা দাবি দিয়েছ তোমাদের দাবির সঙ্গে অ্যাগ্রি (একমত) করছি। আমরা নীতিগতভাবে সব দাবি মেনে নিচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের আলাদা ডেকে নিয়ে কথা বলার প্রস্তাব দিলে ভিসির সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিকাল ৫টার মধ্যে উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে আসার আলটিমেটাম দেন। তিনি না এলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে বলেও শিক্ষার্থীরা জানান।
প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।
এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৪২:৫৯ ২৩০ বার পঠিত