সম্প্রচার মাধ্যমের সবার জন্য আইনী সুরক্ষায় একসাথে কাজ করতে হবে - তথ্যমন্ত্রী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সম্প্রচার মাধ্যমের সবার জন্য আইনী সুরক্ষায় একসাথে কাজ করতে হবে - তথ্যমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৯



---

‘সম্প্রচার মাধ্যমের সবার জন্য আইনী সুরক্ষায় একসাথে কাজ করতে হবে’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

মন্ত্রী বলেন, দেশে সম্প্রচার নীতিমালা হয়েছে। সম্প্রচার আইন যদি আমরা পাশ করতে পারি, সে আলোকে সম্প্রচার মাধ্যমের কর্মীদের চাকুরি সুরক্ষা হবে। এছাড়া, নবম ওয়েজবোর্ডে স্পষ্ট বলা আছে, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য একটি আলাদা নীতিমালা করতে হবে। আমি মনেকরি নবম ওয়েজবোর্ডের সুপারিশের আলোকে একটি নীতিমালাও করা প্রয়োজন, যাতে করে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার শ্রমিক, কর্মচারি, সাংবাদিক সবার জন্য আইনী সুরক্ষা থাকে। সে লক্ষ্যে আপনাদের সাথে নিয়ে আমি কাজ করবো। সম্প্রচার আইন ও গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আমরা আশা করবো, খুব সহসা আমরা মন্ত্রিসভা হয়ে পার্লামেন্টে নিয়ে যেতে পারবো।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) সেমিনার হলে বেসরকারি টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি আয়োজিত ‘সম্প্রচার মাধ্যমের সংকট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন।

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের আহবায়ক রেজওয়ানুল হক রাজার সভাপতিত্বে ও মহাসচিব শাকিল আহমেদের সঞ্চালনায় পিআইবি মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র প্রেসিডেন্ট মোল্লা জালাল, একাত্তর টিভি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, ডিবিসি২৪ টিভি চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, মুন্নী সাহা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেন।

এসময় তথ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমের মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের বলবো, সাংবাদিকদের বঞ্চিত করবেন না। সময়মতো বেতন পরিশোধ করবেন। কারণ গণমাধ্যমকর্মীরা অনেক কষ্টে কাজ করেন, তারা যদি সবাই কর্মবিরতি করে, তাহলে চ্যানেল চলবে না। সেটি তারা করছে না, এইজন্য তাদের ধন্যবাদ। যে খেয়ে না খেয়ে, তিনমাস বেতন না পেয়ে তারা কাজ করছে। তাদের এ দরদ সবার অনুধাবন করা প্রয়োজন, যাতে অহেতুক কারো চাকুরচ্যুতি না ঘটে।’

ড. হাছান বলেন, ‘আপনারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিশ্চয়ই সাধুবাদ দেবেন কারণ তাঁর হাত ধরেই এই প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৬ সালে তিনি যখন সরকার গঠন করেন তখনই তিনি প্রথম প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স দেন। সম্প্রচার মাধ্যম অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বাংলাদেশে গত ১১ বছরে তিন গুনের চেয়ে বেশি বেড়েছে। ২০০৯ সালে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বার ক্ষমতা নেন, তখন বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা ছিল ১০টি। এখন টেলিভিশনের সংখ্যা সম্প্রচারে আছে প্রায় ৩৪টি, আমরা লাইসেন্স দিয়েছি ৪৫টিকে। অর্থাৎ আরো কিছু সম্প্রচারে আসবে। আমি মন্ত্রণালয়ে যে সমস্যাগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি সেগুলো সমাধানের জন্য প্রথম থেকেই চেষ্টা করেছি। দীর্ঘদিনের পূঞ্জিভুত সমস্যা হঠাৎ করে সমাধান করে দেয়া যায়না, একটু সময় প্রয়োজন।’

‘এরপরও অনেক সমস্যা ইতোমধ্যেই সমাধান হয়েছে’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেমন ক্যাবল নেটওয়ার্কে টেলিভিশনের ক্রম ঠিক রাখার জন্যে বা উপরে নেয়ার জন্য ক্যাবল অপারেটরদের সাথে যে দেন-দরবার করতে হতো এবং দেন-দরবারের সাথে আরো অন্যান্য কিছুও করতে হতো। সেটি করে সিরিয়াল ঠিক করা হলো পরে আবার নামিয়ে দিতো, এখন সেই পরিস্থিতির সারাদেশে অবসান ঘটেছে।’

‘দ্বিতীয়ত: টেলিভিশনে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন বিদেশে চলে যাচ্ছিল; উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো আইনসম্মত নয়, আইন বিরোধী। আমরা ডাউলিংকের পারমিশন যারা পেয়েছে, তাদের সবাইকে চিঠি দিয়েছি, মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে এবং বিদেশি চ্যানেলগুলোকেও তারা জানিয়েছে। এতে যেটি হয়েছে বাংলাদেশের যে বিজ্ঞাপন বিদেশি চ্যানেলে প্রচার হতো সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে। তবে, বাংলাদেশের কয়েকটি কোম্পানীর ভারতেও কারখানা আছে, ভারতে রেজিস্টারপ্রাপ্ত। ভারতের রেজিস্টার্ড কোম্পানী যখন বিজ্ঞাপন দেয়, এটি আমাদের আওতায় পড়ে না। তবুও এ বিষয়ে আমরা ব্যাখ্যা চেয়েছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন চলে যাচ্ছিল, সেটি তো আর যাচ্ছে না। এখন যারা মালিক পক্ষ নিশ্চয় জানেন ছয় মাস আগের তুলনায় টেলিভিশনগুলো অনেক ভালো চলছে। যেটা সিঙ্গাপুরে অন্য কোম্পানীর মাধ্যমে চলে যেত, আর হুন্ডি হয়ে টাকা চলে যেত, সেটা বন্ধ হয়েছে। সুতরাং পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। একটি পদক্ষেপ নেয়ার পর কার্যকর হতে কয়েক মাস সময় লাগে।’

‘এখানে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে সম্প্রচার মাধ্যমে এখনো ডিজিটাল হয়নি, বেআইনী বিজ্ঞাপন বন্ধ বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় অন্তরায়। আমরা সম্প্রচার মাধ্যমেকে ডিজিটাল করার জন্য কাজ করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সম্প্রচার মাধ্যমকে ডিজিটাল করা হবে। এর বাইরেও বিদেশি চ্যানেল যাতে ক্লিন ফিড দেয়, সেজন্য আরো সে চিন্তা-ভাবনাও আমাদের আছে। বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বিদেশি এই চ্যানেলগুলোর যেহেতু দর্শক তৈরি হয়েছে, আমরা যখন আইনের কড়াকড়ি করতে যাই, যারা এগুলো ডাউলিংক করে এখানে সম্প্রচার করে তখন এই দর্শকদের কাজে লাগিয়ে তারা ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। কিন্তু দেশের আইন বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। যাতে দেশের আইন বাস্তবায়িত হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের নাট্যকর্মীরা নাটক পায়না, বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনচিত্রে যারা অভিনয় করে তারা ঠিকমতো কাজ পাচ্ছে না, আমাদের দেশে ছেলেমেয়েরা অনেক স্মার্ট এবং তারা ভালো বিজ্ঞাপন বানায়। ইদানিং আমরা দেখতে পাচ্ছি কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে বিদেশি সিরিয়াল নিয়ে এসে ডাবিং করে সেগুলো সম্প্রচার করা হচ্ছে, এমনকি ত্রিশ বছরের পুরনো সিরিয়ালও। বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন বিদেশে বানিয়ে নেয়া হচ্ছে, অনেক ভালো ভালো শিল্পী থাকা সত্ত্বেও বিদেশে সেকেন্ড গ্রেডের শিল্পী দিয়ে সেগুলো বানিয়ে নেয়া হচ্ছে। এতে আমাদের ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারেও উদ্যোগ নিয়েছি, এজন্য ট্যাক্স দিতে হবে। এ উদ্যোগ কেউ নেয়নি।’

ড. হাছান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই বিদেশি সিরিয়াল প্রচারের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি নিয়ে প্রচার করার জন্য পরিপত্র জারি করেছি। এবং যারা চালাচ্ছে তারা অনুমতি নিচ্ছে। যেখানে একটি সিনেমা সেন্সরবোর্ড অনুমতি নিয়ে আসতে হয়, সেখানে একটি সিরিয়াল যেটিতে ৫০ বা ১০০ পর্ব আছে, সেটি কি সরকারের কাছে একটি চিঠি দিলেই কি আমরা অনুমতি দিয়ে দিবো ? সে কিন্তু হওয়া সমীচিন নয়। সেজন্য আমরা একটি কমিটি করে দিচ্ছি খুব সহসা, সেন্সর বোর্ডে যেমন ছবি প্রদর্শন করতে হয় সেরকম এ কমিটির কাছে উপস্থাপন করতে হবে। কমিটি যদি মনে করে এটি আমার ভাষা, সংস্কৃতি কৃষ্টির সাথে যায়, দেশের জনগোষ্ঠী বিপদে পড়বে না অর্থাৎ সেন্সর বোর্ড যে বিবেচনায় একটি সিনেমা অনুমোদন দেয়, সেই বিবেচনাগুলো এবং রাষ্ট্রস্বার্থ, দেশের স্বার্থ, জনগণের স্বার্থ, জনগণের মনন তৈরি স্বার্থ, জনগণের মানসিকতা তৈরির স্বার্থ এগুলো বিবেচনা করে তারপর অনুমতি দেয়া হবে। এগুলো কিন্তু আগে হয়নি।’

‘আর টিআরপি করার জন্য সরকার কি লাইসেন্স দিয়েছে?’ প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা টিআরপি করে, সরকারের কাছে তারা কি অনুমতি নিয়েছে? এভাবে চলতে পারে না, আমরা সেটি আলোচনা করেছি মন্ত্রণালয়ে। খুব সহসা টিআরপি নীতিমালা হবে। এবং যারা টিআরপি করবেন, তারা সরকারের অনুমতি নিয়েই করতে হবে। যে কেউ টিআরপি করবেন না। টিআরপি কিভাবে হয় সেটিও আমার মোটামুটি জানা আছে। টেলিভিশনের সিরিয়াল ঠিক করতে যেমন নানা দেন-দরবার হয়। টিআরপি করার ক্ষেত্রে যে এগুলো হয় না, তা নয়। সুতরাং এক্ষেত্রে আমরা একটি নিয়ম নীতির প্রবর্তন করতে যাচ্ছি। এখানেও আমরা একটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারবো বলে আমি আশা করছি।’

‘বিজ্ঞাপন পড়ে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ৩০ শতাংশ বিজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন যেতে পারে, কিন্তু সেটি ট্যাক্স সরকার পাচ্ছে না, এভাবে কি যে যেভাবে ইচ্ছা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি বিজ্ঞাপন দিয়ে দিবে, আমরা কি সবাই বিদেশি রেজিস্টার্ড কোম্পানীর জন্য বিজ্ঞাপন তৈরি করছি যে তাদেরকে বিজ্ঞাপন দিয়ে দিবো, আর টাকাগুলো ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দিয়ে দিবো?’ – প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যেখানে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে ডাবিংকৃত সিরিয়াল আনতে টাকা লাগে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে যাওয়ার আগে স্যাটেলাইট ফি দেয়ার জন্য সরকারের অনুমোদন লেগেছে, সেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে দিচ্ছে কোনো অনুমোদন ছাড়া। পয়সাগুলো ক্রেডিট কার্ড থেকে নিয়ে নিচ্ছে। এভাবে রাষ্ট্রের টাকা চলে যাচ্ছে বিদেশি কোম্পানীর কাছে, এটি কি সমীচিন? এ নিয়ে আমি সবার সাথে কথা বলেছি এনবিআর ও অন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। এবং আমরা কিছু নিয়ম নীতি সেখানে করতে যাচ্ছি। সেখানে কিসের ভিত্তিতে সেখানে বিজ্ঞাপন যাবে, এবং ট্যাক্স ভ্যাট আদায় করবো।’

তথ্যমন্ত্রী ফেসবুকের বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে যোগাযোগ মাধ্যমে মধ্যে ফেসবুকই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এসেছে। তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে, তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। তারা যেন এখানে অফিস করেন, প্রয়োজনে এখানে একটা কোম্পানী করেন যাতে আইডি কার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে একাউন্ট খোলা যায়। এখানে দশ বছরের ছেলেও একাউন্ট খুলছে, একজনে বিশটি একাউন্ট খুলছে, ফেক আইডি দিয়ে খুলছে। সেখানে তো কোনোভাবেই কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। যদি সেখানে আমাদের ন্যাশনাল আইডি কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে যদি কেউ খুলে, একজন ষোল বছরের বাচ্চাও খুলতে পারবে, কিন্তু অনুমতি লাগবে। একসময় আমাদের দেশে মোবাইল সিম কার্ড নিতে কোনো অনুমতি লাগতো না, যে যেমন ইচ্ছা একশটা নিলেও কোনো সমস্যা হতো না। সেটিকে আমাদের সরকার রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এনেছে। একজন ব্যক্তি কয়টা সিমকার্ড ব্যবহার করতে পারবেন সেটিও নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে। কোম্পানীর জন্য কয়টা পারবে সেটিও বলা আছে। আমি তো মনে করি ফেসবুকের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অবশ্যই প্রবর্তন হওয়া উচিত।’

‘কারণ যে যেমন ইচ্ছা আইডি খুলে নিজের নাম গোপন করে দেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা করবে, অপরের চরিত্র হনন করবে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য সেখানে নানা কূটকৌশল প্রয়োগ করবে, সামাজিক অস্থিরতার জন্য একটি বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে, এটি হওয়া উচিত না’ বলে মন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব আছে বলে আমি মনেকরি।’

মোবাইল অপারেটরদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোকে শুধুমাত্র কোম্পানী নেটওয়ার্ক পরিচালনা করার জন্য লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। তাদেরকে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে সেটিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অথবা অন্য মাধ্যমে সেটি প্রচার করা আবার সেখানে বিজ্ঞাপন নেয়ার জন্য আবার টাকা নেওয়ার এই লাইসেন্স তো তাদেরকে দেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে আইন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। এখানেও প্রচুর বিজ্ঞাপন চলে যায়। একজনের ডোমেইনে আরেকজনের আগ্রাসন করা সঠিক নয়। এটি আইন বহির্ভূত। এটি যাতে না হয়, এখানে যাতে একটি পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা আসে সেজন্য আমরা কাজ করছি।’

‘নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি মামলা হয়েছিল। মামলায় সরকারের ওপর রুল জারি হয়েছিল। এবং আমরা ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করার কারণে আরেকটি মামলা হয়েছে। আইনী প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই সমস্ত চ্যালেঞ্জগুলোকে মাথা নিয়েই এটি ঘোষণা করা হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘আমি সবসময় মন্ত্রী থাকবো না, সুতরাং আমি আপনাদের একজন। আমি ছোটবেলা থেকে সংবাদকর্মী। আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি আপনাদের হয়ে, আপনাদের দৃষ্টিতে বিষয়গুলোকে দেখার চেষ্টা করি। এরপরও দায়িত্বে থাকলে সবপক্ষের কথা শুনতে হয়। সেখানে একটি ভারসাম্য তৈরি করতে হয়। এটিও আশা করি আপনারা অনুধাবন করবেন। এই কাজ যত চ্যালেঞ্জই হোক, আপনাদের সাথে নিয়ে এগিয়ে যাব, গণমাধ্যমের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে।’

জাফর ওয়াজেদ বলেন, সাংবাদিকদের জীনন মান বাঁচাতে পুরনো সংকটের সমাধান হবার এখনই সময়। মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতা ছাড়া মালিকেরা এই সমস্যা সমাধান হবে না। রাষ্ট্র রক্ষকারী মিডিয়াকে সহযোগিতা করতে সরকারকে নতুন আঙ্গিকে কাজ করতে হবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার লাইসেন্স নেই। লাইসেন্স হলে মালিক-শ্রমিক ৫০ শতাংশ করে সমঝোতায় আসতে হবে।’ ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আইন মেনে ও সংকট চিহ্নিত করে ঐক্যবদ্ধভাবে গণমাধ্যমকর্মীদের সংকট সমাধান করতে হবে।

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের আহবায়ক রেজওয়ানুল হক রাজা টেলিভিশন চ্যানেলে গণমাধ্যমকর্মীদের যে শর্তে নিয়োগ দেয়া হয়, সেটা মানা এবং টিভি সাংবাদিকদের জন্য ওয়েজবোর্ড ও আইন প্রণয়নের দাবি করেন। মোল্লা জালাল বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন না হলে গণমাধ্যমকর্মীরা অবহেলিত থাকবে, তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে টেলিভিশন কর্মীদের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

টিআরপি ও বিজ্ঞাপন নিয়ে যে বৈষম্য দূর করতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন মুন্নী সাহা। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির সাথে সাংবাদিকতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত, তাই তাদের কাজের নিরাপত্তা প্রয়োজন।’ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘গণমাধ্যম মালিকরা এই মাধ্যমটিকে অবহেলিত করে রেখেছেন । গণমাধ্যম আইন না থাকায়, সরকার সহায়ক হলেও গণমাধ্যমকর্মীরা চ্যানেলে দারোয়ান ও লাঠিয়াল বাহিনীর কাজ করে, প্র্রাতিষ্ঠানিকতা নেই গণমাধ্যমকর্মীদের।’ সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিক নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে চাইলে সকল সংকট সমাধান হবে।’

বিজেসি’র প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে জুলহাজ মান্নান বলেন, ‘সম্প্রচার মাধ্যমে শিল্পনীতি মানা হয়না, শ্রমিক আইনও মানা হয় না।’ বিনা নোটিশে মোহনা টিভি’র ২২ জন গণমাধ্যমকর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়টিও তুলে ধরেন সাংবাদিকরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১:৩৭:২৪   ১৪৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ