
পুলিশের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, অ্যাড. সাখাওয়াতসহ যুবদল ও ছাত্রদলের ১৯ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩শ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. ছাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ৩৯।
মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদত এটিএম কামাল, মহানগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক নূর এলাহী সোহাগ ওরফে রাকিব, বিএনপির কর্মী স্বপন মিয়া, কামরুল হাসান, মামুনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হাসান ইউসুফ টিপু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম ছক্কু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, মঞ্জু, আকরাম প্রধান, মহানগর মৎসজীবী যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান লিংকন। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৩শ জনকে।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় রাতেই মামলা দায়ের হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামুন মাহমুদ ও এটিএম কামালকে গ্রেফতার করেছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
মামলার এজাহারে বাদী এসআই ছাইফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, গত সোমবার সকাল ১০ টার দিকে শহরের দুই নম্বর রেল গেট এলাকায় উল্লেখিতরা সংঘবদ্ধভাবে যানবাহন ভাংচুর চালাচ্ছে এমন সংবাদে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে অস্ত্র ও গুলি লুটপাটের চেষ্টা চালায়। পরে পুলিশ উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করলে অন্যরা পালিয়ে যায়। এ সময় নূর এলাহী সোহাগ ওরফে রাকিব, বিএনপির কর্মী স্বপন মিয়া, কামরুল হাসান, মামুনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে লাঠি ও ইটের টুকরা জব্দ করা হয়েছে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহরের ডিআইটি এলাকা থেকে মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি ২নং রেলগেট এলাকায় আসামাত্র পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধা ভেঙ্গে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন তাদের পথ আগলে রাখে এবং তাদের ব্যানার কেড়ে নিতে চায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে নেতাকর্মীরা। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার উদ্দেশ্যে চারিদিক থেকে ধাক্কাধাক্কি এবং এক পর্যায়ে তার পোষাক ধরে টানাটাটি শুরু করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে রক্ষাসহ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া একসময় সাবেক ছাত্রনেতা জাকির খানের অনুগামী থাকলেও পরে তিনি নেতা বদল করেন। এখন তিনি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশার অনুসারী হিসেবেই পরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৪৮:৫২ ২৫১ বার পঠিত