
যৌতুকের দাবি না মেটানোয় গৃহবধূ সোহাগীর মাথার চুল কেটে দেয়াসহ অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে স্বামী জনি ইসলাম সুমন। আর এ অমানবিক কাজে সুমনকে সহযোগিতা করেছে তার মা, বাবা ও বোন।
এই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর শনিবার রাতে ওই গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকে আটক করেছে পুলিশ। অমানবিক ও চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দিনাজপুর শহরের পশ্চিম দফতরিপাড়া এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত তিন বছর আগে দিনাজপুর শহরের পশ্চিম দফতরিপাড়া মহল্লার হাফিজুল ইসলামের পুত্র জনি ইসলাম সুমনের সঙ্গে নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলনী গ্রামের আবু সায়েমের কন্যা মোসাম্মৎ সোহাগীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সুমন যৌতুক হিসেবে মোটরসাইকেল বাবদ ১ লাখ টাকা দাবি করে।
সোহাগীর বাবা ৩৫ হাজার টাকা দিতে সক্ষম হন। বাকি টাকা দিতে না পারায় বিভিন্ন সময়ে সোহাগীর ওপর নির্যাতন চালায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। এরই মধ্যে একটি সন্তান জন্ম দেয় সোহাগী।
শনিবার শহরের পশ্চিম দফতরিপাড়ায় স্বামীর বাড়িতে আবার সোহাগীকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পেরে স্বামী সুমন তার মা ও বোন সুমির সহযোগিতায় ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রী সোহাগীকে অমানবিক নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে তারা সোহাগীর মাথার চুল কেটে দেয়।
সোহাগীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে নিরাপত্তার জন্য পার্শ্ববর্তী বাড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সোহাগীর বাবার বাড়ির লোকজন আসেন। শনিবার রাতে কোতোয়ালি থানায় গিয়ে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকে আসামি করে নারী নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন সোহাগী।
এ ব্যাপারে সোহাগী জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য বিভিন্ন চাপ ও নির্যাতন করে আসছে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
এ দিকে মামলা দায়েরের পর রাতেই কোতোয়ালি পুলিশ স্বামী জনী ইসলাম সুমন, ননদ সুমী বেগম, শাশুড়ি জরিনা বেগম ও শ্বশুর হাফিজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক মো. মমিনুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সোহাগী রোববার নীলফামারীতে তার বাবার বাড়িতে চলে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৩৯:৩৬ ১২১ বার পঠিত