শুক্রবার উইকেন্ড ক্রিকেট ম্যাচ আছে। ফিজিওর কাছে হালকা চিকিত্সা নিতে সকালেই বিসিবি একাডেমিতে হাজির জাতীয় দলের নির্বাচক ও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। তার সঙ্গে বসেছিলেন জুনিয়র দলের নির্বাচক এহসানুল হক সেজান। হাবিবুল বলছিলেন, কাল (আজ) গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।
সাংবাদিকদের কেউ একজন রসিকতার ছলে বলে উঠলেন, ‘আপনাদের প্রতিপক্ষ কি জিম্বাবুয়ের স্মরণকালের সবচেয়ে শক্তিশালী দলের চেয়ে শক্ত?’ প্রশ্ন শুনে শুধুই হাসলেন হাবিবুল। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত হোম সিরিজ নিয়ে কথা বলার জন্য গতকাল সাংবাদিকদের অনুরোধ তিনি এড়িয়ে গেছেন হাস্যরসে।
সাফল্যের জোয়ার দিয়ে হোম সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ। তিন ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ে পাত্তাই পায়নি স্বাগতিকদের কাছে। ব্যর্থতার মিছিল ভেঙে ছন্দে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। ক্রিকেটাররাও ফর্মে ফিরেছেন। প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটেই প্রতিপক্ষকে হারানোর রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। অথচ এত প্রাপ্তির সিরিজ নিয়ে সব আলোচনা যেন থেমে গেছে রাত পোহানোর পরই।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজে তিন ফরম্যাটে ৪৮৩ রান করেছেন লিটন দাস। রানের ফল্গুধারা বয়েছে তার ব্যাটে, সবচেয়ে সফল এই ওপেনার। টেস্টে ৫৩, ওয়ানডেতে দুটি সেঞ্চুরিসহ ৩১১, টি-২০-তে দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ১১৯ রান করেছেন তিনি। বুধবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিটনকে উদ্দেশ্য করেই এক ক্রিকেটপ্রেমী লিখেছেন, প্রায় দুই বছর আগে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধেই তিন ম্যাচে দুই সেঞ্চুরিসহ ৩৪৯ রান করেছিলেন ইমরুল কায়েস। তারপরই ফর্ম হারিয়েছেন তিনি।
লিটনকে নিয়েও একই আশঙ্কা রয়েছে অনেকের মনে। লিটন অবশ্য ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আত্মবিশ্বাসী। সে জন্য সব ধরনের কষ্ট করতে প্রস্তুত তিনি। বুধবার রাতে ম্যাচ শেষে লিটন বলেছেন,‘আপনি যখন একটা জিনিস হাতে পাবেন তখন ফেলে দেওয়া অনেক সহজ আর কী! ধরে রাখাটা অনেক কষ্টকর। এখন এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ যে আমি আসলে পারফরম্যান্সটা কতটা ধরে রাখতে পারছি। প্র্যাকটিস লেভেল থেকে শুরু করে ম্যাচের সবকিছুই কষ্টদায়ক হবে। আমি চেষ্টা করবো এই পারফরম্যান্স ধরে রাখার জন্য।’
জিম্বাবুয়ের নখদন্তহীন বোলিং আক্রমণ কোনো রকম চ্যালেঞ্জেই ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। যেটি স্বীকার করেছেন লিটনও। ডানহাতি এই ওপেনার বলেছেন, ‘বোলিং আক্রমণ যদি দেখেন যে অন্যান্য দল যারা আছে, আমি তেমন বলছি না যে খুব আক্রমণাত্মক বোলিং সাইড হবে। তবে একজন ব্যাটসম্যানের জন্য তো একটা বলই যথেষ্ট আউট হওয়ার জন্য। আপনি যদি আজকে মিচেল স্টার্কের বিরুদ্ধে যে ফোকাসে ব্যাটিং করবেন তেমনি এমপফুর বিপক্ষে ব্যাটিং করলেও সেই ফোকাস দিতে হবে। হয়তোবা বোলিং লেভেল যেটা থাকে যে উইকেট টেকিং ডেলিভারি এই জিনিসটা কমে যেতে পারে। এখানে স্কোরিং শটের অপশনটা একটু বেশি থাকে।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই দ্রুতগতিতে রান করেন লিটন। আন্তর্জাতিক সিরিজেও তার ঝলক দেখিয়েছেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যেন তার ব্যাটিং পূর্ণতা পেল। যেমন ধারাবাহিক ছিলেন, তেমনি আক্রমণাত্মক ছিলেন। বড়ো ইনিংসও খেলেছেন।
এক সিরিজে ৪৮৩ রান আশা করেননি খোদ লিটনও। তিনি বলেছেন, ‘এত বড়ো প্রত্যাশা কখনোই ছিল না। টি-২০-তে যে জিনিসটা হয় যে একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে আশা করা যায় পঞ্চাশ করবে। আর আজকের (বুধবার) ম্যাচটি অনেক সহজ ছিল। কোনো চাপ ছিল না যে রানের একটা তাড়াহুড়ো আছে। সবমিলিয়ে ভালো গেছে।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৭:১০ ২১৬ বার পঠিত
