
সোনারগাঁয়ে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ আশরাফুলের (৪১) মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকাল আটটায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার স্ত্রী রোজিনার (৩০) অবস্থাও আশংকাজনক। তাকে বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত আশরাফুলের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে তার স্ত্রী রোজিনার শারীরিক অবস্থাও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
নিহত আশরাফুলের নিকট আত্মীয় আকতার হোসেন জানান, ঢাকা মেডিকেল থেকে লাশ বুঝিয়ে দেয়ার পর রংপুর জেলার কোতোয়ালি থানার চন্দনবাগ গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে জানাজা ও দাফন করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৪ মার্চ) ভোরে সোনরাগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের সোনাপুর এলাকায় হাজী গুলজার হোসেনের একতলা বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে চূলা থেকে নির্গত জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে ভাড়াটে দম্পতি আশরাফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রোজিনা মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন।
আশরাফুলের শরীরের ৭৩ শতাংশ ও রোজিনার ৬৩ শতাংশ পুঁড়ে যায়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
আশরাফুল ইসলাম বন্দর উপজেলার মদনপুরে অবস্থিত ইপিলিয়ন গ্রুপের নিরাপত্তা কর্মী ও তার স্ত্রী রোজিনা সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের পোশাক কারখানা উর্মি গ্রুপে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গত কয়েক বছর যাবত তারা গুলজার হোসেনের এই ফ্ল্যাটে ভাড়ায় বসবাস করছেন। তাদের একমাত্র কন্যা গত বছর এস.এস.সি পাশ করার পর থেকে গ্রামের বাড়িতেই থাকে। মাঝে মাঝে এই বাসায় এসে বাবা মায়ের সাথে কিছুদিন থেকে যায়।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে রান্নাঘরের চূলার বার্ণার বন্ধ না করেই তারা ঘুমিয়ে পড়েন। ফলে সারারাত গ্যাস বের হয়ে পুরো ফ্ল্যাটে ছড়িয়ে পড়ে জমাট বেঁধে থাকে। শনিবার ভোরে রোজিনা সকালের নাশতা তৈরি করতে রান্নাঘরে গিয়ে চূলায় আগুন ধরালে বিকট শব্দে জমাট গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় পুরো ঘরে আগুন ধরে গিয়ে রোজিনা ও তার স্বামী আশরাফ মারাত্মক দগ্ধ হন।
বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের লোকজন ও এলাকাবাসী এসে দগ্ধ দম্পতিকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আগুনে তাদের দুইজনের গায়ের পোশাক ও বিছানাপত্রসহ ঘরের সমস্ত আববাপত্র পুঁড়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকায় গ্যাস সংকটের কারণে এই দম্পতি বাড়ি ছেড়ে দেবার কথা বললে বাড়ির মালিক গুলজার হোসেন নিম্নমানের প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে আলাদাভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়েছিলেন। সেই গ্যাস পাইপের লিকেজ থেকেই এই দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে তারা দাবি করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৫:০৯ ১৬৯ বার পঠিত