দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সব ধরণের খেলাধুলা। করোনাভাইরাস থেকে কবে মুক্তি হবে, কবে আবার মাঠের দরজা খুলবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন অবস্থায় খেলোয়াড়রা যেমন ঘর বন্দী, কোচদেরও অবস্থা একই।
করোনার কল্যাণে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা দীর্ঘদিন পর অনাকাঙ্ক্ষিত ছুটি পেয়েছেন অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য। কোচরাও অবস্থান করছেন যে যার বাড়িতে।
টাইগারদের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও চলে গেছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশে পৌঁছে ছিলেন কোয়ারেন্টিনে। তবে খোঁজ রেখেছেন শিষ্যদের। অনেকের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন এই সময়ে।
যোগাযোগ যতই হোক ফোনে কিংবা মেইলে, দায়িত্ব যখন নিজের কাঁধে দুশ্চিন্তা তো থাকবেই। তবে এই দেখে ডমিঙ্গো খুশি হয়েছেন ছেলেরা ফিটনেস ঠিক রাখতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেমনটা বলছিলেন শিষ্যদের নিয়ে আরটিভি অনলাইনকে।
‘দেখুন, আমি মনে করি খেলোয়াড়দের উচিত সবসময় নিজেদের ফিট রাখার চেষ্টা করা। বিভিন্ন সময়ে ওদের দেখি নিজেদের তাগিদে সেশন বাই সেশন শরীর চর্চা করছে। সেক্ষেত্রে তাদের শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখার চেষ্টা থাকা প্রয়োেজন৷’
লক-ডাউনের এই সময়টায় খেলা না থাকলেও ক্রিকেটাররা সময় পেয়েছে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর। এটাকে মানসিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবেও দেখছেন টাইগার কোচ। তবে আছে দুশ্চিন্তাও।
‘এসময়ে তারা নিজেদের মানসিকভাবে প্রস্তুতির ও সুযোগ পেয়েছে৷ লক-ডাউনের ভেতর খেলোয়াড়দের কিছু মানসিক ব্যপারও আছে। তারা এখন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে ঠিকই তবে লম্বা সময় ক্রিকেটের সঙ্গে না থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে একজন কোচের দুশ্চিন্তাও কম না।’
করোনা বিপর্যয়ের ঠিক আগেই শেষ হয়েছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। এই সিরিজেই ঘরের মাঠে টাইগারদের সফল ওয়ানডে অধিনায়ক ইতি টানেন তার অধিনায়ক ক্যারিয়ারের। এরপরই ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব উঠেছে।
একজন ওপেনার ব্যাটসম্যান হয়ে তামিম কতটা পারবেন অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাতে? এ নিয়ে অবশ্য ভাবছেন না রাসেল ডমিঙ্গো। কোচ আশাবাদী, তামিম ঠিকই সামলে নেবে দারুণভাবে।
‘অনেক আছে যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের পাশাপাশি টেস্ট ও ওয়ানডেতে দলের হয়ে ওপেনিংয়ে ব্যাট করেছেন। আশা করি তামিমেরও কোনও সমস্যা হবে না। অ্যালিস্টার কুকও দায়িত্ব নিয়ে অনেক দিন ধরে খেলেছে এবং অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে এটি করছে। সুতরাং এ নিয়ে কোন সমস্যা নেই।’
ওয়ানডে তো গেল, চলতি বছরেই রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। যেখানে দেশ সেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কোনো বিকল্প নেই।
সূচী অনুযায়ী যদি অক্টোবরে বিশ্বকাপ শুরু হয় সেক্ষেত্রে সাকিব মিস করতে পারেন কয়েকটি ম্যাচ। তবে ডমিঙ্গো আশা করছেন, পিছিয়ে যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেক্ষেত্রে লাভটা হবে বাংলাদেশেরই।
‘দেখে মনে হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়সূচি পুনরায় নির্ধারণ করা হতে পারে৷ পিছিয়ে গেলে সাকিবকে গোটা টুর্নামেন্টেই পাব আমরা। তবে যদি অক্টোবরে খেলা হয় তবে আমরা তাকে পাচ্ছিনা।’
ডমিঙ্গো মনে করিয়ে দিলেন লক-ডাউন শেষে দ্রুত আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন না করার। এক্ষেত্রে ম্যাচ খেলতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে ক্রিকেটাররা। সময়সূচী অন্তত চার সপ্তাহ সময় দিতে হবে খেলোয়াড়দের।
‘আমি মনে করি না, এত দ্রুত ম্যাচ খেলার প্রয়োজন আছে। ছেলেদের এই সময়ের পর খেলায় ফিরতে অন্তত চার সপ্তাহ সময় লাগবে৷ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমি মনে করি, যদি সরাসরি খেলতে নামি তবে আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারব না। সুতরাং, সঠিক অবস্থান ফিরে পেতে আমাদের সকলের এই সময়টা প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ সময়: ২১:০০:০৯ ১২৫ বার পঠিত