
কে বোঝে আল্লাহ তোমার
গায়েবি সব খেলা
উম্মতকে বাঁচাতে চাই
নূহ নবীর ভেলা।
করোনার আতঙ্ক নিয়েই পনেরোটি রোজা শেষ করে ফেলেছি আমরা। আজ থেকে রোজার শেষার্ধ শুরু। এখনও যারা সিয়াম থেকে দূরে, তাদের জন্য আর কয়েকটা দিন সুযোগ আছে নিজের গোনাহ মাফ করিয়ে সায়েম হওয়ার।
এবারের রমজান আমাদের মাঝে এসেছে ভিন্ন পরিবেশে। একাকী ঘরে তারাবিহ পড়তে হচ্ছে। মসজিদে কমসংখ্যক মুসল্লি নিয়ে তারাবিহ হচ্ছে। যারা খতম তারাবিতে অভ্যস্ত, মসজিদ যাদের প্রাণের ঠিকানা ছিল, তাদের জন্য এটি সত্যিই বড় বেদনার সময়। যার যার বাসাতেই তারাবিহ পড়ছি আমরা। প্রতি রাকাতের সেজদায় আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে বলছি, হে আল্লাহ, তারাবির অসিলায় আপনি আমাদের এ বিশ্বকে করোনা থেকে মুক্তি দিন।
আরবি তারাবি শব্দের অর্থ বিশ্রাম। যেহেতু রমজানের পুরো রাত জায়নামাজে কাটানোই মুমিনের সাধনা, তাই তারাবির নামাজ প্রবর্তন। কিন্তু সবার পক্ষে এভাবে একাকী ইবাদতে মশগুল হওয়া সম্ভব নয় মনে করে ফকিহরা মসজিদে একত্রে তারাবিহ পড়ার নিয়ম করেছেন। সর্বপ্রথম হজরত ওমর (রা.) এ নিয়ম চালু করেন। তারপর থেকেই তারাবির জামাতের ধারা শুরু হয় মুসলিম বিশ্বে।
যেহেতু আমরা এবার বাসায় তারাবিহ পড়ছি, অবশ্যই হক আদায় করে ধীরে-সুস্থে তারাবিহ পড়তে হবে। দীর্ঘ তেলাওয়াত, লম্বা সেজদা, বড় রুকুর মাধ্যমে অন্তত শেষার্ধের তারাবিহগুলো পড়ি, কোরআন তেলাওয়াত আত্মাকে পরিশুদ্ধ করবে। যেহেতু এখন আর বাইরের কোনো ঝুট-ঝামেলা নেই। তাই সারাটি রাত তারাবিহ তাহাজ্জুদেই কাটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। তাড়াতাড়ি তারাবিহ শেষ করে রাতে বাকি সময় মোবাইল-টেলিভিশন দেখে কাটানোর মতো বোকামি এই মহামারীর দুঃসময়ে করা বোকামি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার সময় বয়ে যায়।
সাহাবিদের তারাবিহ পড়তে পড়তেই সেহরির সময় হয়ে যেত। আজকাল তারাবিহ হয়ে গেছে তাড়াতাড়ির নামাজ। তারাবিহ সুন্নাত নামাজ। তাই আমরা কমবেশি যতটুকুই পারি তারাবিহ পড়ব মন দিয়ে। প্রেম নিয়ে। গভীর আনন্দ এবং স্নিগ্ধতার সঙ্গে।
বান্দা আমল বেশি করুক এটা আল্লাহরও উদ্দেশ্য নয়। আল্লাহ চান বান্দা যেন সুন্দর করে মন লাগিয়ে আমল করে। সূরা মুলকে আল্লাহ বলেন, আহসানু আমালা। আমি দেখতে চাই, তোমাদের মধ্যে কে কত সুন্দর আমল করে। তিনি কিন্তু বলেননি, আকসারু আমালা- কে কত বেশি আমল করে সেটা আমি দেখতে চাই। রাসূলও (সা.) একই কথা বলেছেন, আখলিস দিনুকা ইয়াকফিকাল আমালুল কলিল। তোমার দ্বিনকে খাঁটি করো। সুন্দর গোছানো করো। তাহলে অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে। আল্লাহ আমাদের দ্বিনের খাঁটি আমল করার তওফিক দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০১:০৬ ১৩৮ বার পঠিত