
করোনা আতঙ্কের মধ্যে মানিকগঞ্জের আরিচায় আবার নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। আরিচা ঘাট ও বন্দর বাজার এবং আশপাশের এলাকায় বর্ষার আগেই যমুনা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে শিবালয় বন্দর বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় লোক জন। যমুনার ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয়রা দীর্ঘদিন যাবত দাবি জানিয়ে আসছেন। স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার সরেজমিনে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট পরিদর্শন করেন পানি মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। এ সময় তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বর্ষা শুরুর আগেই আরিচার ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন।
বর্ষার আগেই এরকম নদীভাঙন শুরু হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন যমুনা পারের আরিচা ঘাট এবং শিবালয় বন্দর বাজারের ব্যবসায়ীরা। গত কয়েকদিন ধরে বন্দর বাজার, পুরাতন টার্মিনালের পশ্চিম পাশ এবং আরিচা ঘাটের অদূরে দক্ষিণ শিবালয় ও আরিচা খাল পাড় এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। করোনার কারণে পুরো জেলায় চলছে লকডাউন। লোক জনের এমনিতেই উদ্বেগের শেষ নেই। এর মধ্যে নদীভাঙন শুরু হওয়ায় দুশ্চিন্তা আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেছে তাদের।
আরিচা বন্দর বাজারের পশ্চিম পাশে নদীর পাড় এলাকায় বাজারের কয়েকটি দোকান ঘর এরই মধ্যে নদীতে ধসে পড়েছে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে এখন সেগুলো হারানোর ভয়ে ভীত ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে আরিচা ঘাট সংলগ্ন নিহালপুর এলাকা হতে দক্ষিণ শিবালয় পর্যন্ত নদীভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলাসহ বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শিবালয় বন্দর ব্যবসায়ী সমাজ কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে পানিসম্পদ মন্ত্রী, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক, শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নির্বাহী প্রকৌশলী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং নির্বাহী প্রকৌশলী বিআইডব্লিউটিএ বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
শিবালয় বন্দর বাজারের অনেক দোকান ঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। আরিচায় নদীভাঙন অব্যাহত থাকলে হুমকিতে পড়বে ঐতিহ্যবাহী আরিচা নদীবন্দর, শিবালয় বন্দর হাটবাজার, আবহাওয়া অফিস, পিসিপোল নির্মাণ প্ল্যান্ট, তেওতা-জাফরগঞ্জ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সড়ক, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি অফিস কমপ্লেক্স, নির্মাণাধীন ড্রেজিং ইউনিট অফিস, শিবালয় থানা কমপ্লেক্স, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও এলাকার বহু বাড়ি-ঘর। উজানে ভাঙন শুরু হলে ভাটিতে পাটুরিয়া ফেরি টার্মিনালও নদীগর্ভে বিলীন হবার উপক্রম হবে।
শিবালয় বন্দর ব্যবসায়ী সমাজ কল্যাণ সমিতির প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে এবার বর্ষায় বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন জানান, পানি মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত কাজ করে যাচ্ছি। বর্ষার আগেই প্রায় কোটি টাকা প্রকল্পের মাধ্যমে আরিচার ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ৩:৪০:৩১ ১২৪ বার পঠিত