
বাংলাদেশে কোভিড–১৯ মহামারির শততম দিনে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯০ হাজার পেরিয়ে গেছে। মারা গেছেন ১ হাজার ২০০ জনের বেশি। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে। সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বমুখী পর্যায় শেষ হওয়ার আগেই মূলত অর্থনৈতিক বিবেচনায় সাধারণ ছুটি শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে; রাস্তাঘাটে ও জনপরিসরে মানুষের চলাচল অনেক বেড়েছে। কিন্তু সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্ব একেবারেই কমেনি, বরং আরও বেড়েছে।
সে কারণে উচ্চ হারে সংক্রমিত এলাকাগুলোকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে সেসব এলাকায় আংশিক লকডাউন পরিচালনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরের যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৬০ জন ও তার বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন এবং হবেন, সেগুলো রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত হবে। ঢাকার বাইরে প্রতি ১ লাখে ১০ জন সংক্রমিত হলে সেই এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত হবে।
ইতিমধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতায় ৪৫টি এবং চট্টগ্রাম মহানগরে ১১টি এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এসব এলাকায় কীভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে, সে বিষয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে কিছু বিভ্রান্তির খবর পাওয়া যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত পুরো এলাকা লকডাউন করা হবে না, যে অংশে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি, সেটি লকডাউন করা হবে।
লকডাউনের অংশটি হবে সীমিত বা ছোট। আবার বলা হচ্ছে প্রতিটি রেড জোনের পুরোটাতে সাধারণ ছুটি কার্যকর থাকবে। সাধারণ ছুটিতে অফিস-আদালত বন্ধ থাকার কথা। দোকানপাট, শপিং মল ও অন্যান্য দৈনন্দিন সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে কী হবে তা পরিষ্কার নয়।
তা ছাড়া রেড জোনের ভেতরেই একটি অংশের মানুষ অন্য অংশে চলাচল করতে পারবে কি না, তা–ও পরিষ্কার নয়। রেড জোনগুলোর যেসব অংশ লকডাউন করা হবে না, সেগুলো যে রেড জোনেরই অন্তর্ভুক্ত, তা কি শুধু ঘোষণার দ্বারাই বোঝা যাবে? সেসব অংশের বাসিন্দাদের চলাফেরায় সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রক্রিয়া কী হবে, তা পরিষ্কার নয়।
রেড জোনের যেসব অংশে সংক্রমণ অপেক্ষাকৃত কম বলে লকডাউন কার্যকর হবে না, সেসব অংশের বাসিন্দারা স্বাভাবিক চলাফেরা, কাজকর্ম ইত্যাদি প্রত্যাশা করবেন। সে ক্ষেত্রে রেড জোন ঘোষণার তাৎপর্য কী হবে, তা পরিষ্কার নয়। এসব বিষয় অবিলম্বে পরিষ্কার করা উচিত, রেড জোনগুলোর বাসিন্দাদের জন্য সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা প্রচার করা দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩০:০০ ১১৫ বার পঠিত