কংশ নদীর ভাঙনে পাঁচ শতাধিক বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » কংশ নদীর ভাঙনে পাঁচ শতাধিক বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে
বুধবার, ১৭ জুন ২০২০



---

পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কংশ নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ফকিরাবাজার সংলগ্ন চারটি গ্রামের প্রায় চার শতাধিক বাড়ি-ঘর ও জেলা শহরের সঙ্গে এই অঞ্চলের জনগণের যোগাযোগের একমাত্র সড়কটিও ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, কংশ নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকায় ফকিরের বাজার এলাকার কর্ণপুর, চরপাড়া, পাঁচপাই ও বাঘরুয়াসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে আরও পাঁচটি গ্রামের প্রায় চার শতাধিক বাড়িঘর। ভাঙনের মুখে রয়েছে নেত্রকোনা জেলা শহরের সঙ্গে ফকিরের বাজার এলাকার জনগণের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক ঠাকুরাকোনা-ফকিরের বাজার সড়কের চরপাড়া এলাকায় আধা-কিলোমিটার অংশ। নদীর তীব্র ভাঙনে চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় রয়েছে নদীর পাড়ে বসবাসরত স্থানীয় লোকজন।

চরপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার জানান, কয়েক বছর ধরে কংশ নদের ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে কর্ণপুর, চরপাড়া, পাঁচপাই ও বাঘরুয়া গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে লোকজন এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। যোগাযোগের একমাত্র সড়কটিও চরম হুমকির মুখে রয়েছে। এখনই সড়কসহ নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধ না দিলে আরও কয়েক হাজার বাড়ি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কর্ণপুর গ্রামের পংকজ মজুমদার জানান, নদী ভাঙন রোধের জন্য আমরা কয়েক বছর ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন অদ্যাবধি নদী ভাঙন রোধে টেকসই স্থায়ী কোনও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

কর্ণপুর গ্রামের কামাল হোসাইন বলেন, আমাদের জমি-জমা বাড়িঘর সবকিছু নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। তারপরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না।

স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি সম্প্রতি নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। ভাঙনের ভয়াবহতা দেখে নেতৃবৃন্দ দ্রুত স্থায়ী বাঁধের আশ্বাস দেন।

নদীগর্ভে বসতবাড়ি হারানো কর্ণপুর গ্রামের সাহেব উদ্দিন, আব্দুল মন্নাফ, স্বপন সরকার, সত্যেন্দ্র বর্মণ, সবুর মিয়া ও সেলিম মিয়া জানান, নদী ভাঙনের কারণে তাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। অন্যের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়ে আছি। নিজের বাপের আমলের বাড়িঘর আজ কংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত কেউ আমাদের খোঁজ খবর নিতে আসেনি। নদী ভাঙনের কারণে শুধু বাড়িঘরই নয় ফসলি জমিও নদীগর্ভে চলে গেছে। নদী ভাঙনের কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই আজ উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে।

বারহাট্টার রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু জানান, নদী ভাঙনের কারণে কর্ণপুর, চরপাড়া, পাঁচপাই, ফকিরের বাজারসহ অন্তত চারটি গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছে। শত শত একর ফসলী জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। বর্ষার শুরুতে পানি বাড়তে শুরু করায় বাড়ছে কংশ নদীর ভাঙন। চোখের সামনে বাড়ি-ঘরসহ ফসলি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। নদীর তীর রক্ষা বাঁধসহ অবিলম্বে সড়কটি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নদীর ভাঙনের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নদী ভাঙন রোধকল্পে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সড়কের ভাঙন কবলিত অংশটিকে সাময়িক রক্ষার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৪:৩৯   ১৬৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ