কোভিড ১৯ (করোনাভাইরাস) আক্রান্তে বিশ্বে নিত্যদিন পালাবদলের খেলা চলছে। আজকের হিসাব আগামীকাল পালটে যাচ্ছে। যেমন গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্তে পেরু স্পেনকে এবং সৌদিআরব তুরস্ককে ছাড়িয়েছে।
আজ রোববার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৯০ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১ লাখ ৯১ হাজার ৮০ জন। নতুন করে প্রাণ গেছে ৪ হাজার ৩৪৬ জনের। এ নিয়ে করোনারায় মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৩ জন মানুষ।
আর ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৩ জন।গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ২৬৭ জন।বিশ্বে বর্তমানে মধ্যম মানের আক্রান্ত ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ৮০৪ জন এবং গুরুতর অসুস্থ্য ৫৮ হাজার ৫৩০ জন।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৯ লাখ ৩৫ হাজার ৭৭০ জন।সবচেয়ে বেশি মৃত্যুও হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩১৮ জন। আক্রান্তের মতো সুস্থ হওয়ার দিক থেকেও সবার শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত অন্তত ১২ লাখ ৬০ হাজার ৪০৫ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই উঠে এসেছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ৩৭৬ জন আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৪ হাজার ৩৬৫ জন। এখন পর্যন্ত ব্রাজিলে ৯ লাখ ৭৮ হাজার ৬১৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
আক্রান্তে তৃতীয় অবস্থানে রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৫১৫ জন। আর মারা গেছেন ১০ হাজার ২৭ জন।অপরদিকে সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮৭৯ জন।
প্রতিবেশী দেশ ভারত আক্রান্তের সংখ্যায় উঠে এসেছে ৪ নম্বরে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯০৪ জন, আর এখন পর্যন্ত মৃত্যু ১৯ হাজার ২৭৯ জনের।ভারতে সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৯ হাজার ৬২ জন।
পেরুতে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৯৯ হাজার ৮০ জন, মোট মৃত্যু ১০ হাজার ৪১২ জন আর সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২১ জন।
স্পেনে আক্রান্ত ২ লাখ ৯৭ হাজার ৬২৫ জন, মৃত্যু ২৮ হাজার ৩৮৫ জন আর সেরে উঠেছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৯৫৮ জন।
চিলিতে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৯১ হাজার ৮৪৭ জন।মোট মৃত্যু ৬ হাজার ১৯২ জনের এবং সুস্থ্য হয়েছেন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৫ জন।
এর পরের অবস্থানে যুক্তরাজ্য, এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯০০ জন। মৃতের সংখ্যায় তৃতীয় দেশটিতে মারা গেছেন ৪৪ হাজার ১৯৮ জন।
মেক্সিকোতে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৫২ হাজার ১৬৫ জন।মোট মৃত্যু ৩০ হাজার ৩৬৬ জনের এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ৫২ হাজার ৩০৯ জন।
ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৪১ হাজার ৪১৯ জন।দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৮৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।আর ইতিমধ্যে ইতালিতে সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৯১ হাজার ৯৪৪ জন।
ইরানে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮ জন।মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৪০৮ জনের এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯৪৯ জন।
পাকিস্তানে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ২৫ হাজার ২৮৩ জন।মোট মৃত্যু ৪ হাজার ৬১৯ জনের এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৪ জন।
সৌদিআরবে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৫ হাজার ৯২৯ জন।মোট মৃত্যু ১ হাজার ৮৫৮ জনের এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৬ জন।
তুরস্কে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৪ হাজার ৬১০ জন।মোট মৃত্যু ৫ হাজার ২০৬ জনের এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৯২ জন।
জার্মানিতে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৮ জন।মোট মৃত্যু ৯ হাজার ৮১ জনের এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ জন।
সাউথ আফ্রিকায় মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭৭ জন। মারা গেছেন ৩ হাজার ২৬ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ৯১ হাজার ২২৭ জন।
ফ্রান্সে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৬০ জন। মারা গেছেন ২৯ হাজার ৮৯৩ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ৭৭ হাজার ৬০ জন।
এদিকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মারা গেছেন ১ হাজার ৯৯৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২৮৮ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৯ জন।
শনিবার (৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মিডিয়া বুলেটিনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত মহা-পরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
অতিরিক্ত মহা-পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৭২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২৮৮ জনের দেহে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৯৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৭৩ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭০ হাজার ৭২১ জন।
ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে। তবে, এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার প্রতি বিশেষ আহ্বান জানানো হয়।
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৮:৩৪ ১০০ বার পঠিত