
টানা ভারী বর্ষণ, ড্রেনেজব্যবস্থা না থাকায় এবং সর্বোপরি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভার সাহাপুর, বানিনাথপুর, ভট্টপুর ও রঘুভাঙা গ্রামসহ সাত গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙিনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে বিষধর সাপের উপদ্রব। অনেক এলাকায় স্থায়ীভাবে পানি জমে থাকায় মানুষের চলাচলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
পানি মাড়িয়ে চলাচল করায় প্রতিনিয়ত জ্বর, ঠাণ্ডা ও হাঁচি-কাশিসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জলাবদ্ধতা নিরসনে সোনারগাঁও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলে আবেদন করেও কোনো ফল না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁও পৌরসভার সাহাপুর, বানিনাথপুর, ভট্টপুর ও রঘুভাঙাসহ আশপাশের সাত গ্রামে গত কয়েক দিনের টানা ও ভারী বর্ষণে ড্রেনেজব্যবস্থা না থাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এরই মধ্যে অনেক এলাকায় রাস্তাঘাটের পাশাপাশি বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন কাঁচাপাকা স্থাপনা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে পৌর এলাকার সাহাপুর ও বানিনাথপুর এলাকায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া গ্রামগুলোতে একদিকে মহামারী করোনাভাইরাস আতঙ্ক ও অভাব, আর অন্যদিকে জলাবদ্ধতা।
অনেক এলাকায় পানিদূষিত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ দূষিত পানির কারণে জ্বর, ঠাণ্ডা ও হাঁচি-কাশিসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে বিষাক্ত সাপ, মশা ও জোকের উপদ্রব। জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ও লিখিতভাবে অবহিত করা হলেও কোনো কাজ হয়নি।
অনেকে পানির মধ্যেই ইট দিয়ে চুলা নির্মাণ করে রান্নাবান্না করছে। অনেকেই গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে মারাত্মক সমস্যার মধ্যে জীবনযাপন করছেন।
বানিনাথপুর গ্রামের আনিসুর রহমান জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের জন্য কোনো ড্রেনেজব্যবস্থা তৈরি না করায় সাহাপুরসহ আশপাশের এলাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
অনেক এলাকায় মানুষ বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হতে পারছেন না। এ ব্যাপারে পৌর কাউন্সিলর বা কোনো জনপ্রতিনিধিও খোঁজখবর নিচ্ছেন না।
সাহাপুর গ্রামের গৃহবধূ রেহেনা আক্তার বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। পানি সরানোর স্থায়ী ব্যবস্থা না থাকায় বর্তমানে পানি জমে দুর্গন্ধ ও পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
সোনারগাঁও পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মধু বলেন, পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে সেচপাম্প বসিয়ে পানি সরানো হবে স্থায়ী সমাধানেরও চেষ্টা চলছে।
সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র ও বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি আলহাজ সাদেকুর রহমান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২০:৫৮ ১১৪ বার পঠিত