
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আইভি রহমান সব সময় মাঠে থাকতেন। তিনি জনসাধারণের পাশে থাকতেন। যেকোনো সভায় তিনি শ্রমিকের সাথে বসে থাকতেন। কারণ তার মধ্যে কোনো অহমিকা ছিল না। এতো ভালো একজন মানুষের এমন বিভৎস মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না।’
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকের শুরুতে আইভি রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়ে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনলাইনে এ বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আইভি রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা এবং প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। আমরা দীর্ঘকাল একসাথে রাজনীতি করেছি।’
২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় আইভি রহমানকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয় এবং ২৪ আগস্ট তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, আমরা তার মৃত্যুর নির্দিষ্ট তারিখটি জানি না। আজ তার মৃত্যুবার্ষিকী এবং আমরা তাকে শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি আরও বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের লীগের ২২ নেতা-কর্মী মারা যান এবং তাদের মধ্যে চারজন ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের। এছাড়া সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় দুজনের লাশ ছিল। সম্ভবত ওগুলো আক্রমণকারীদের মৃতদেহ ছিল। আমরা তাদের সম্পর্কে কিছুই জানি না, কেউ তাদের মরদেহ দাবি করতে আসেননি। তবে আমরা আমাদের ২২ নেতা-কর্মীকে হারিয়েছি এবং আহত হয়েছিলেন ৬০০-৭০০ জন।
তিনি বলেন, ওই হামলায় আহত অনেকেই চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ওঠার পরও শরীরে থাকা স্প্লিন্টারের কারণে পরে মারা যান। এছাড়া অনেকে এখনও তাদের দেহে স্প্লিন্টার বহন করে বেড়াচ্ছেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে বর্বর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এছাড়া গুরুতর আহত অনেকেই আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেন। আওয়ামী লীগ নেতারা সেদিন মানব ঢাল তৈরি করে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিলেন। একের পর পর এক গ্রেনেড হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২১:৫৪ ৮১ বার পঠিত