সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে পুরো রাজধানী

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে পুরো রাজধানী
বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০



---রাজধানীকে নিরাপদ করার জন্য এবং উন্নত দেশের আদলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করতে পুরো শহরকেই ক্লোজড সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসছে পুলিশ। সরকারের প্রস্তাবিত সেফ সিটি প্রকল্পের আওতায় ডেভেলপমেন্ট অব ঢাকা সিটি ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম নামের একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করছে পুলিশ সদর দপ্তর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) আকারে সেটা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।

গত বছর এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হলেও করোনা মহামারির কারণে এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।

এর আগে ঢাকা নগরে এলাকাভিত্তিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও তার সুফল পুরোপুরি পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে সেফ সিটি প্রকল্পের আগেই ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫০০ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের আরেকটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে ডিএমপি।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে যত বেশি ক্যামেরা বসানো হবে ততটাই নিরাপদ হবে শহর।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেফ সিটি প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার ছয় হাজার কিলোমিটার ছোট-বড় রাস্তার পুরোটাই কয়েক হাজার সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যার মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং যানবাহন চলাচলের ত্রুটি ধরতে কাজ করবে এই ক্যামেরা পদ্ধতি।

ডিএমপি কমিশনার মুহা. শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই মেগাসিটিতে কোটি মানুষের সঙ্গে প্রতিদিনই নতুন মানুষ যোগ হয়। এমন জনবহুল ও গলি-মহল্লার শহরে কোথাও কিছু ঘটলে তা বের করতে আমাদের বেগ পেতে হয়। তাই প্রতিটি এলাকা আমরা সব সময়ের জন্য নজরে নিয়ে আসতে চাই। ঢাকা শহরকে নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সেফ সিটি প্রকল্পের আওতায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়ও ৫০০ পয়েন্টে ক্যামেরা বসানো হবে।’

পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপির একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যে সিসি ক্যামেরাগুলো দেখা যায় সেগুলো এলাকাভিত্তিক, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিজস্ব উদ্যোগে হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে সেগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করার মতো ব্যবস্থা নেই। এগুলো থেকে প্রয়োজনীয় ফুটেজ সংগ্রহ যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সম্প্রতি সংসদ ভবন এলাকায় মাইক্রোবাসের চাপায় পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্নার মৃত্যুর ঘটনায় ৩৮২টি সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করে গাড়িটির ব্যাপারে ধারণা পান তদন্তকারীরা। আলোচিত এমন অনেক ঘটনায় সিসি ক্যামেরা থাকলেও সহায়তা পেতে সময় লাগে। আবার ক্যামেরা না থাকা বা অকেজো থাকায় সহায়তা মেলে না তদন্তে। এ সমস্যাগুলো নিরসনের জন্যই বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে সেফ সিটি নামের প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়, যা ডেভেলপমেন্ট অব ঢাকা সিটি ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম প্রকল্প নামে পরিচিত।

সূত্রগুলো জানায়, কয়েক বছর আগে এলাকাভিত্তিক সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেয় ধানমণ্ডি, তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা পশ্চিমসহ ঢাকার কয়েকটি থানা। পরবর্তী সময়ে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনে আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটি (ল অ্যান্ড অর্ডার কো-অর্ডিনেশন কমিটি বা এলওসিসি) ওই এলাকায় এক হাজার ২০০ সিসি ক্যামেরা বসায়। গুলশান ফাঁড়িতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বসিয়ে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে কিছু এলাকার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের অল্প পরিমাণ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেগুলো দিয়ে যানবাহনের বিরুদ্ধে ভিডিও মামলা করা হয়।

তবে গুলশানের কার্যক্রম ছাড়া এলাকাভিত্তিক কার্যক্রমগুলো সফল হয়নি। সড়কের মোড়ের ক্যামেরাগুলো এখন প্রায় অকেজো। যেগুলো নষ্ট হয়নি সেগুলো থেকেও ফুটেজ সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। অনেক এলাকা আছে ক্যামেরার আওতার বাইরে।

জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুর রাজ্জাক কালের কণ্ঠকে বলেন, ডিএমপি থেকে আগের মতোই দক্ষিণ সিটিতে ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। তবে সেফ সিটির মাধ্যমে অনেক ক্যামেরা বসানো হবে। ওই প্রকল্পের ক্যামেরার সঙ্গে শুধু ক্রাইম অবজারবেশন নয়, ট্রাফিক সিস্টেমসহ অনেক ফিচার যোগ করা হবে।

গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘শিগগিরই সেফ সিটি প্রকল্প শুরু হবে। প্রথম অবস্থায় ঢাকায় যদি সফল হই তবে চট্টগ্রাম এবং অন্য সিটিতে প্রকল্পটি নিতে পারব। শিগগিরই আমরা পরিকল্পনা কমিশনে প্রজেক্ট পাঠাব। আশা করি, শিগগিরই এটা পাস হবে।’

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, করোনার কারণে দেরি হলেও শিগগিরই প্রকল্পটি যাচাই-বাছাই শেষে পুলিশের পক্ষ থেকে ডিপিপি আকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এই প্রকল্পে ঢাকার দুই সিটির প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার সড়কে বসবে সিসি ক্যামেরা। ক্যামেরাগুলো হবে জার্মানির উন্নত প্রযুক্তির, যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করে অপরাধীকে শনাক্ত করবে।

ক্যামেরাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি শাখাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। একটি গাড়ির নাম্বার প্লেট ক্যামেরার সীমানায় এলেই গাড়িটি শনাক্ত হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মামলা হয়ে যাবে। অপরাধ করলে গাড়ি শনাক্তের পর দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা বার্তা পাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১:০৬:০৬   ৭৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ