দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ৩৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৮০ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৪২ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২৮১ জন।করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৮০ জন। গতকালের চেয়ে ৬৪ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৩ হাজার ৪৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৪ হাজার ৮৮৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৪৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ১৭৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২৭৭ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১১ হাজার ৯৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮৯৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৫ লাখ ৫০ হাজার ২০৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ১২ হাজার ৯৯৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮৯ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ১২০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩১টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯২টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৪৫৪ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৯৩৪ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫২০টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৩ জনের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন পুরুষ ৪ জন নারী। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৩৬৪ জন আর নারী ৯১৭ জন। শতাংশের হিসেবে পুরুষ ৭৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং নারী ২১ দশমিক ৪২ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে মারা গেছেন ৩২ জন আর বাড়িতে মারা গেছেন ১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিবেচনায় ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৯ জন; যা দশমিক ৪৪ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৬ জন; যা দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৪ জন; যা ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৬২ জন; যা ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৭৩ জন; যা ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ১৭১ জন; যা ২৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ১১৬ জন; যা ৪৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
বিভাগ ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৬৯ জন; যা ৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৩২ জন; যা ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৮৭ জন; যা ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৫৬ জন; যা ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৬৬ জন; যা ৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৯১ জন; যা ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৯০ জন; যা ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৯০ জন; যা ২ দশমিক ১০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৯৮০ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৬৫৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৪২ জন, রংপুর বিভাগে ৭৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩০২ জন, বরিশাল বিভাগে ৪২ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৮৫ জন, সিলেট বিভাগে ১৪৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৩ জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৭৮ জন, কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৭৮০ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৮ জন। আর ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭৭১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ২১৭ জন। একই সময়ে আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৪৯৪ জন। আর আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৮১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫১ হাজার ৩৯২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ৯৪২ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৬২৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৭৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৫৫২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৭৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৩টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৫৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৫৯৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৮৩৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৪টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৪৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৮২৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ১৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫০টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০১ জন এবং খালি আছে ২৪৯টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৭৩৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪৩৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৭৮টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮৯৮টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৯২৩টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৭৩টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৯৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৬ হাজার ১৫৯টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৫১২ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ১৬২ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৮২৪ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ লাখ ৭৩ হাজার ১৪৮ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৫ হাজার ২৭৬ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩০ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৪৮ লাখ ৫৪ হাজার ১৪০ এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৪:১৪ ৭৭ বার পঠিত