
প্রভাব, প্রবৃত্তি ও আধিপত্য লাভের জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। নিজেকে প্রভাবশালী করে তুলতে কিছু মানুষ এতটাই নিচে নামে যে তাদের অনিষ্টের ভয়ে তাদের নিকটাত্মীয়রাও তাদের থেকে দূরে সরে যায়। অনেকেই তাদের সম্মান করতে শুরু করে। তবে সে সম্মান ভালোবাসার নয়, ঘৃণার। রাসুল (সা.) তাঁর প্রিয় উম্মতদের এজাতীয় মানুষ থেকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইল। তিনি বলেন, তাকে অনুমতি দাও। সে তার বংশের নিকৃষ্ট সন্তান। অথবা বলেন, সে তার গোত্রের ঘৃণ্যতম ভাই। যখন সে প্রবেশ করল, তখন তিনি তার সঙ্গে নম্রভাবে কথাবার্তা বলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এর ব্যাপারে যা বলার তা বলেছেন। এখন আপনি তার সঙ্গে নম্রভাবে কথা বললেন। তিনি বলেন, হে আয়েশা! আল্লাহর কাছে মর্যাদায় নিকৃষ্ট সেই ব্যক্তি, যার অশালীন ব্যবহার থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংসর্গ বর্জন করে চলে। (বুখারি, হাদিস : ৬১৩১)
তাই নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য পরিবার কিংবা সমাজের মানুষের সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করে, সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে, মানুষকে চাপে রেখে জোর করে অর্জিত সম্মানের কোনো মূল্য নেই। রাসুল (সা.) তাদের নিকৃষ্ট মানুষ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাওবা করে ফিরে না এলে তাদের ঠিকানা জাহান্নামে হবে।
প্রভাবশালী হওয়ার নেশায় যারা ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তোলে, তাদের শিষ্যদের সব পাপের বোঝাও তাদেরই বহন করতে হবে। তাদের সৃষ্ট ত্রাসের বিষফোড়া যত দূর বিস্তৃত হবে, এর যত শাখা-প্রশাখা গজাবে, তাদের সবার সব পাপের বোঝা ত্রাসের বীজ বপনকারী মূল হোতাকেই ভোগ করতে হবে।
আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের অংশ আদম (আ.)-এর প্রথম ছেলে (কাবিলের) ওপর বর্তায়। কারণ সে-ই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন ঘটায়। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৩৫)
অতএব, আসুন! সম্মান কিংবা অর্থের জন্য পাপের পথ অবলম্বন না করে মহান আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হই। ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ আমাদের অফুরন্ত রিজিক দেবেন, উভয় জাহানে সম্মানিত করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৫:৪৮ ১৫২ বার পঠিত