রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৮



--- গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সামরিক বাহিনীর আক্রমণ শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে। মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশও তাদের আশ্রয় দেয়। জানা যায়, সেই থেকে এখন পর্যন্ত্ম প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য দুই দেশের সরকার দুটি চুক্তিও করেছে। এ নিয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রপ গঠন করা হয়েছে। আর সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য যে, শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে ইউএনএইচসিআরের সদর দপ্তরে এই স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এবং ইউএনএইচসিআরের মহাপরিচালক ফিলিপো গ্র্যান্ডি নিজ নিজ পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

আমরা বলতে চাই, যখন সমঝোতা স্মারকে সইয়ের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সমঝোতা স্মারক সইয়ের ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়াটি সহজ হবে। আর রোহিঙ্গারা যে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরত গেছেন, এর মাধ্যমে সেটিও নিশ্চিত হওয়া যাবে- তখন ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। এটা বলা দরকার, তথ্য মতে, এর আগে ১৯৯২ সালে যখন রোহিঙ্গারা এসেছিল, তখনও ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। আর এবারও সেই চুক্তির আদলে এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে সমঝোতা স্মারকটি চূড়ান্ত করে সই করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, যত দ্রত সম্ভব রোহিঙ্গা প্রত্যবাসনের বিষয়টির সুরাহা করতে হবে। যদিও এটা সুখকর যে, এখনো আন্তর্জাতিক মহল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে তৎপর রয়েছে। আমরা চাই, কোনো ধরনের তৎপরতা যেন বৈঠক আর আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ থেকে না যায়। যত দ্রত সম্ভব রোহিঙ্গা সংকট নিরসন জরুরি। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সমঝোতা স্মারকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার অধিবাসী হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া চুক্তিতে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার ও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ভূমিকা ও কার্যক্রম সম্পর্কে বিশদভাবে বলা আছে।

স্মারক অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের তথ্য সরবরাহ, কাঠামো তৈরির জন্য জমি দেয়া ও অন্যান্য সুবিধা নিয়ে কাজ করবে সরকার। অন্যদিকে, রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া, তাদের অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর। এর আগে, গত জানুয়ারি মাসে সরকার ও শরণার্থী সংস্থা তথ্য সরবরাহ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল, যা মূল প্রত্যাবাসন চুক্তির সহায়ক হিসেবে কাজ করবে এমনটিও জানা যায়।

আমরা বলতে চাই, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে যখন গত বছরের ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করে মিয়ানমার। ওই চুক্তি অনুযায়ী ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপেস্নসড পারসন্স ফ্রম রাখাইন স্টেট’ শীর্ষক চুক্তি অনুযায়ী ২৩ জানুয়ারির মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা, কিন্তু সেটা বিলম্ব হওয়াকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গত কারণেই প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আন্ত্মর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সম্পর্কে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি কারও অজানা নয়। ফলে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্ত্মবায়নের ক্ষেত্রে কোনো কিছু বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকেও নজর দিতে হবে। কেননা আমলে নিতে হবে যে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়; অতীতে আসা রোহিঙ্গাদের বড় অংশ এখনও মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারেনি। কাজেই চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ সুসম্পন্ন করার লক্ষ্যে আমাদের পক্ষ থেকে যেমন কূটনৈতিক পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে তেমনি আন্তর্জাতিক চাপও অব্যাহত রাখা আবশ্যক। এবারে, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে যে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ, সেটার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৪২:১৭   ৫১৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ