উম্মতের প্রতি আল্লাহর তিন অনুগ্রহ

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » উম্মতের প্রতি আল্লাহর তিন অনুগ্রহ
রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০



---

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনা করেছেন আমার উম্মতের ভুল, ভুলে যাওয়া বিষয় এবং এমন কাজ যা তাকে করতে বাধ্য করা হয়েছে।’ (সুনানে কুবরা লিল-বাইহাকি, হাদিস : ১৪৮৭১)।

আলোচ্য হাদিসে আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহের কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি উম্মতে মুহাম্মদির ভুলে করা কাজ, ভুলে যাওয়া বিষয় এবং বাধ্য হয়ে করেছে এমন কাজগুলো মার্জনা করে দিয়েছেন।

ভুলে যাওয়া : ‘ভুলে যাওয়া’র অর্থ হলো কোনো বিষয়ে অন্যমনস্ক হওয়া বা তার স্মরণ না থাকা। এমন বিষয়ে ইসলামী শরিয়ত বহু ক্ষেত্রে মার্জনা ঘোষণা করেছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাকড়াও করবেন না যদি আমরা ভুলে যাই অথবা ভুল করি।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৬)

আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিররা সহিহ মুসলিমের একটি বর্ণনা উল্লেখ করেছেন, যেখানে আল্লাহ প্রার্থনা কবুলের ঘোষণা দিয়েছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৪৫; তাফসিরে ইবনে কাসির)

ভুলবশত করা : ‘ভুলবশত করা’র অর্থ হলো উদ্দেশ্যের বিপরীত কাজ করা। আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে উম্মতে মুহাম্মদির ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাতে তোমাদের কোনো গুনাহ নেই যা তোমরা ভুলবশত করে থাকো, কিন্তু তোমাদের অন্তরে তার ইচ্ছা থাকলে গুনাহ হবে।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫০)

বাধ্য হওয়া : ‘বাধ্য হওয়া’ হলো অন্যের ওপর এমন কোনো কাজ চাপিয়ে দেওয়া, যা সে কখনো নিজ আগ্রহে করত না এবং যে কাজ নিজের জন্য পছন্দও করত না। যেমন—শরিয়তে নিষিদ্ধ কাজে জড়ানো কিংবা আদেশ পালন করতে না দেওয়া। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ এমন কাজের ব্যাপারে মুমিনের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কেউ ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং কুফরির জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার ওপর আপতিত হবে আল্লাহর গজব এবং তার জন্য আছে মহাশাস্তি। তবে তার জন্য নয়, যাকে কুফরির জন্য বাধ্য করা হয় কিন্তু তার অন্তর ঈমানে অবিচলিত।’(সুরা : নাহল, আয়াত : ১০৬)

অবকাশ পাওয়ার শর্ত : ইসলামী আইন বিশ্লেষকরা কোনো অন্যায় কাজে বাধ্য করার ক্ষেত্রে শরিয়ত প্রদত্ত অবকাশ লাভের জন্য কয়েকটি শর্তারোপ করেছেন। তা হলো—

১. ভীতি প্রদানকারী এমন শক্তিধর হওয়া যে হুমকি বাস্তবায়নে সক্ষম।

২. যাকে বাধ্য করা হয় সে এমন দুর্বল হওয়া যে বলপ্রয়োগকারীকে প্রতিহত করতে অক্ষম।

৩. ক্ষমতা প্রয়োগ এত প্রবল ও কষ্টদায়ক হওয়া যা প্রতিহত করতে না পারা এবং সহ্যের বাইরে।

৪. আক্রান্ত হওয়ার ধারণা প্রবল হওয়া।

এসব শর্ত পাওয়া গেলে ব্যক্তি ইসলামী শরিয়ত ঘোষিত অবকাশ লাভ করবে। পবিত্র কোরআনে যেদিকে ইঙ্গিত দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ কারো সামর্থ্যের বাইরে তার ওপর কিছুই চাপিয়ে দেন না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৬)

অবকাশ লাভের দৃষ্টান্ত : ইসলামী শরিয়ত ভুল করা, ভুলে যাওয়া বা বাধ্য হওয়ার কারণে বহু বিধানের ক্ষেত্রে অবকাশ দিয়েছে। যার কয়েকটি দৃষ্টান্ত হলো—রোজাদার ভুলে কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভঙ্গ না হওয়া, কোনো মুসলিমকে হারাম খাবার গ্রহণে বাধ্য করলে বা কুফরি বাক্য উচ্চারণে বাধ্য করলে গুনাহ না হওয়া, আল্লাহর নামে ভুলবশত শপথ করলে কাফফারা ওয়াজিব না হওয়া, ভুলবশত হত্যা করলে সর্বোচ্চ শাস্তি কিসাস না হওয়া ইত্যাদি। আল্লাহ সবাইকে তাঁর অনুগ্রহ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৪৪:৪৩   ৭২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ