
ঢাকা কলেজের দক্ষিণায়ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম। করোনার শুরুতে হল ত্যাগ করে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হন এই শিক্ষার্থী। মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সরকারি নির্দেশনার পর পরই বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা কলেজ। তার একদিন পরই কলেজের সব আবাসিক হল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
প্রায় দশ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সেশনজট নিরসনে ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন ও প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল মঈনের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার সিন্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৪ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের মাস্টার্স শেষ পর্বের অসমাপ্ত পরীক্ষা ও ২৫ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা। তবে নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার আগে পরীক্ষা ফি, ভর্তি ফি, সেশন চার্জ, হল চার্জসহ সকল বকেয়া ফি পরিশোধ করে ফরম পূরণ করতে হবে শিক্ষার্থীদের। করোনকালে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ফি পরিশোধ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। আবাসিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করা প্রতি শিক্ষার্থীকে দিতে হবে প্রায় দশ হাজার টাকা।
সম্পর্কিত খবর
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া ফেলোশিপ পেলেন ঢাকা কলেজের মাহমুদ
ঢাকা কলেজের ৭ শিক্ষক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
করোনায় আক্রান্ত ঢাকা কলেজের আরও এক শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থীদের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নেই। গত দশ মাস কলেজের আবাসিক হলগুলো বন্ধ ছিল তাই বকেয়া হল চার্জ দিতে নারাজ তারা। একই সঙ্গে পরিবহন, চিকিৎসা, লাইব্রেরিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ না করায় এসব খাতে ফি প্রদানের কোনো যৌক্তিকতা দেখছে না শিক্ষার্থীরা।
তবে কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এখন ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত বেতন ও অন্যান্য ফি নেয়া হচ্ছে। এসব ফি মহামারি করোনাভাইরাস শুরুর অনেক আগের। তাই এসব ফি কমানোর কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম মইনুল হোসেন পূর্বপশ্চিমকে বলেন, এগুলো কমানোর কোন সুযোগ নেই। হল চার্জ ছাত্ররা না দিলে হল চলবে কিভাবে? হল তো ছাত্রদের আয়ে চলে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের হল চার্জ তো আমরা এখন নিচ্ছি না। অনেকেই অনেক কথা বলবে। কিন্তু কলেজ তো পরিচালনা করতে হবে।
অভিযোগ রয়েছে করোনাকালে আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা করা হয়নি। এরপরও মহামারি চলাকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দরিদ্র তহবিল ফি, চিকিৎসা ফি, ছাত্র সংসদ ফি, অভ্যন্তরীণ ও ইনকোর্স পরীক্ষা ফিসহ বিভিন্ন ফি নেয়া হচ্ছে।
এসব বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, কলেজের দরিদ্র তহবিলের সক্ষমতা খুবই সামান্য। এ কারণে সীমিত কিছু শিক্ষার্থী ছাড়া সবাইকে এই তহবিল থেকে সহায়তা দেয়া সম্ভব হয় না। করোনার সময় অনেকেই সহায়তার জন্য এসেছিল, আমরা তাদের নিজ নিজ বিভাগে আবেদন করতে বলেছিলাম। কারণ বিভাগের শিক্ষকরা জানেন কার আর্থিক অবস্থা কেমন।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫১:৫৪ ১০২ বার পঠিত