নিউজ২নারায়ণগঞ্জঃ গাজীপুর এবং খুলনায় ভোটের লড়াই শুরু হয়ে যাওয়ার পর তফসিলের অপেক্ষায় থাকা খুলনা, বরিশালের পাশাপাশি সিলেটেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপর হয়েছেন দুই দলে।
রাজশাহীতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। তবে বেকায়দায় আছে বরিশাল ও সিলেটে। দুই নগরেই একাধিক প্রার্থী দলের প্রতীকে ভোট করতে মরিয়া।
নগরীতে আওয়ামী লীগের মনোয়ন প্রত্যাশী দুই নেতার মধ্যে চলছে ঠান্ডা লড়াই। এর বাইরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন সেলিমও ক্ষমতাসীন দলের হয়ে নির্বাচনে লড়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
২০০১ সালে সিলেট পৌরসভা সিটি করপোরেশন হওয়ার পর দুটি নির্বাচনে জিতে আসা আওয়ামী লীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ২০১৩ সালের নির্বাচনে হেরে যান বিএনপির আরিফুল হকের কাছে।
সিটি করপোরেশন হওয়ার আগেও কামরান সিলেট পৌরসভার মেয়র ছিলেন। আর বিএনপি সরকারের আমলে তিনি মেয়র থাকাকালে আরিফুল ছিলেন কাউন্সিলর।
গতবার হোঁচট খেলেও কামরান ভোটের ময়দান ছেড়ে যেতে রাজি নন। তার ধারণা, এই নগরে জিততে হলে তার বিকল্পও নেই। আর দল তাকেই বেছে নেবে এই ধারণা থেকে ভোটের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি। নানাভাবে নিজের আগ্রহের কথা ভোটারদেরকে জানিয়ে তাদের সমর্থন আশা করছেন তিনি।
কামরান বলেন, ‘দলের নির্দেশেই আমি মেয়র পদে নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। দলীয় সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশেই আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে কাজ করছি।’
কামরান জানান, সিলেটের নেতাকর্মী ও নগরবাসীর সমর্থন তিনি পাচ্ছেন। অবশ্য তিনি এটাও বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমি মেনে নেব।’
তবে গত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর কামরানের মনোনয়নের দাবি এখন দুর্বল হবে ধারণা করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদও নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। আর কামরানকে দলের পক্ষ থেকে সংকেত দেয়া হয়েছে, এটা মানছেন না তিনি।
আসাদ উদ্দিন বলেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেই আমি মেয়র পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘গত সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের অন্যতম কারণ ঘুরেফিরে একই ব্যক্তিকে বার বার মনোয়ন দেয়া। মানুষ নতুনত্ব চায়। আর মেয়র পদ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রার্থী পরিবর্তন করা দরকার।’
দলের নেতা না হয়েও আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনের আগ্রহ দেখানো মাহি উদ্দিন সেলিম অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।তিনি বলেন, ‘আমি মনোনয়ন চাইব। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব।’
২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সদস্য না হয়েও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সমর্থন পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আনিসুল হক।
আর আনিসুলের মৃত্যুর পর দলীয় প্রতীকে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও ক্ষমতাসীন দল মনোনয়ন দেয় পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলামকে। তিনিও আওয়ামী লীগের নেতা নন। অবশ্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে সে নির্বাচন স্থগিত হয়ে গেছে।
দলের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী সম্পর্কে জানতে চাইলে বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দল। দলের যেকোন নেতাকর্মীর মনোয়ন চাওয়ার অধিকার রয়েছে। সব মূল্যায়ন করে দলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।’
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘জনগণের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিই পাবেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন । দলীয় সভাপতি (শেখ হাসিনা) যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই কাজ করবে সবাই।’
বাংলাদেশ সময়: ১২:৪০:৫৫ ৩২৬ বার পঠিত