বাল্যবিয়ের অভিশাপ: সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বাল্যবিয়ের অভিশাপ: সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি
মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১



---

একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি আমাদের সমাজ। করোনা মহামারিকালেও আমাদের দেশে ঘটছে বাল্যবিয়ের ঘটনা। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার তথ্য বিশ্লেষণ করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, করোনাকালে দেশে বাল্যবিয়ে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
বিজ্ঞাপন

বাল্যবিয়ের কারণ হিসেবে দারিদ্র্য, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, নিরাপত্তাহীনতা ইত্যাদি বিষয়কে চিহ্নিত করা হয়; করোনা মহামারির সময় এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ না করা এবং সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি না করতে পারাও বাল্যবিয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণ।

স্বাধীনতা-পরবর্তী চার দশকে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই ঈর্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে; এমনকি শিশুদের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের অগ্রগতি সারা দুনিয়ার প্রশংসা পেয়েছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। অপুষ্টির শিকার শিশুদের হার কমেছে। শিশুশিক্ষায়, বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসনীয়।

শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার পরিধিও অনেক বেড়েছে; কিন্তু প্রদীপের নিচের অন্ধকারের মতো বাল্যবিয়ের এই অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হতে পারছে না। এর দায় যেমন রাষ্ট্রের, তেমনি সমাজেরও। এ ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগেও যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। আর শুধু আইন করেই এ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না, এর জন্য প্রয়োজন হবে ব্যাপক জনসচেতনতাও। বাল্যবিয়ে গ্রামাঞ্চলে বেশি হয়। কারণ গ্রামের অভিভাবকদের অনেকেই অসচেতন।

আইনি নিষেধাজ্ঞা ও অল্প বয়সে মাতৃত্বের ঝুঁকির ব্যাপারে তাঁরা অজ্ঞ। বয়ঃসন্ধিক্ষণে মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন দেখা দিতেই তাঁরা বিয়ে দিতে উঠেপড়ে লাগেন। মানুষকে এসব বিষয়ে সচেতন করতে হবে। পাঠ্যপুস্তক, মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, পত্রপত্রিকা, ওয়েবসাইটসহ নানা মাধ্যমে শিশু অধিকারের বিষয়ে প্রচার চালাতে হবে। নারীশিক্ষার উন্নয়নে সরকার অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এগুলো গ্রহণ করলে কোনো মা-বাবা কন্যাশিশুকে বোঝা মনে করবেন না।

বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে বিয়ে অবৈধ—এ আইন লঙ্ঘিত হলে শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। কারণ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অন্যদেরও সতর্ক করে। জানা যায়, কাজি বা বিবাহ নিবন্ধনকারীরা বয়স বাড়িয়ে দিয়ে বিবাহ নিবন্ধন করেন। আবার বহু বিবাহ নিবন্ধিতই হয় না। সে ক্ষেত্রে যাঁরা বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন, তাঁরাও বয়স নিয়ে কারচুপির আশ্রয় নেন। এসব রোধ করতে প্রশাসন, আইনের হেফাজতকারী ও সমাজকে যৌথভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হবে। আর জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, বাল্যবিয়ে নির্মূল করতে হবে ২০৪১ সালের মধ্যে।

চলতি বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ে এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব উপজেলার সব নির্বাহী কর্মকর্তা, সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও স্থানীয় শিক্ষিতজনরা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলেই শুধু আমরা বাল্যবিয়ের এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারি।

বাংলাদেশ সময়: ০:২০:৫৩   ৬২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ