নিউজ২নারায়ণগঞ্জঃ ভোরের বৃষ্টিতে আয়েশি ঘুম ভেঙে রাস্তায় নেমেই দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যাতায়াতে ব্যাঘাত ঘটেছে। সেই সঙ্গে তৈরি হয় যানজট। ফলে নির্ধারিত সময়ের পরে গন্তব্যে যেতে হয়েছে বহুজনকে।
রবিবার দিনভর আকাশ ছিল প্রায় মেঘমুক্ত। তবে মাঝরাতে বর্ষার মতো ডাকতে থাকে প্রকৃতি। ভোরে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি।
আর বৃষ্টি মানেই রাজধানীতে নিশ্চিত দুর্ভোগ। রাজধানীর নিম্নাঞ্চলে সড়কে পানি। এমনিতেই নিষ্কাষণ ব্যবস্থা ভালো নয়, তারপর পানি সরে যাওয়ার খালগুলো বেদখল। নেই পর্যযাপ্ত খোলা জায়গা। তারওপর বছর জুড়ে বিভিন্ন এলাোয় চলে উন্নয়ন কাজ, খোঁড়াখুড়ি। ফলে বৃষ্টিতে আর এখন নগরবাসীর মন কেমন করার সুযোগ থাকে না, থাকে চলাচলের দুর্ভোগের দুশ্চিন্তা।
মিরপুর হয়ে মতিঝিল পর্যযন্ত নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে এখন বৃষ্টি মানেই মিরপুর ১০ এলাকায় জলজট। সেই সঙ্গে নিউমার্কেট, মিরপুর রোড, যাত্রাবাড়ী, দনিয়া, পুরান ঢাকা, মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় সকালে সড়কে পানি দেখা গেছে। এই পানি মাড়িয়েই চলতে হয়েছে অফিসগামী বা শিক্ষার্থীদের।
আবার বৃষ্টির আরেক প্রভাব পড়ে চলাচলে। সড়কের একাংশে পানি জমে থাকায় স্বাভাবিক গতি কম থাকে গাড়ির, দেখা দেয় যানজট। সেই সঙ্গে দেখা দেয় গণপরিবহনের স্বল্পতা। অপেক্ষার পরও দেখা মেলে না বাসের।
বেলা এগারোটার দিকে শাহবাগে দেখা গেছে বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা যানবাহনের জন্য অপেক্ষমান। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নিয়ে স্বজনরা পড়েছেন দুর্ভোগে।
উত্তরা থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নিতে আসা মধ্যবয়সী মাহমুদা আক্তারের কণ্ঠে খেদ। সাড়ে দশটা থেকে দাঁড়িয়ে থেকেও তিনি কাঙ্ক্ষিত যান পাননি।
বলছিলেন, ‘এভাবে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে জানি না। এমনিতে অসুস্থ, এই দুর্ভোগ আরও অসুস্থ করে দিচ্ছে।’
বৃষ্টি হতে না হতেই রাস্তায় গণপরিবহন কমে আসে কেন সে প্রশ্ন তখন অপেক্ষমানদের মধ্যে।
পরীবাগ ওভারপাসের পাশে যাত্রী নামাচ্ছিল সদরঘাটগামী একটি বাস। তার সহকারী বলছিলেন, এর কারণ আসলে যাত্রী সংকট।
তাহলে মোড়ে মোড়ে যে জটলা দেখা যায়?- এই প্রশ্ন ছুড়ে দিলে ওই পরিবহন শ্রমিক বলেন, ‘এক-দুইটা জায়গায় যাত্রীরা খাড়ায়া থাকলেও বেশিরভাগ জায়গায় যাত্রী পাওয়ন যায় না। হের লাইগ্যা বাস চালানো মুশকিল। যাত্রী পাওয়ন না গেলে তেলের টাকাও ওডে না।’
আবহাওয়া অফিস বলছে, সোমবার বিকাল পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকবে। এছাড়া বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।
অধিদপ্তরের হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও এর আশপাশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩৫ মিলিমিটার।
গত বছর তিন দশকে নজিরবিহীন বৃষ্টিপাতের পর রাজধানীতে জলজটও হয়েছিল স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি। সে তুলনায় অবশ্য এক বছরে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তবে সেটি নিশ্চিতভাবেই পানি ব্যবস্থাপনার জন্য নয়। গত বছরের মতো একঙ্গে একশ বা তার চেয়ে বেশি মিলিমিটার বৃষ্টি না হওয়াতে কিছুটা রক্ষা পেয়েছে নগরবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩৪:১৩ ৪৩৬ বার পঠিত