সারাদিন রোজা রাখার পর প্রথম যে খাবারটা খাওয়া হয় তাকেই ইফতার বলে। রোজার মাসে খাবারের প্রতি বিশেষ সচেতন হওয়া প্রয়োজন। খাদ্যতালিকা যেন সুষম হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেহেতু সারাদিন দেহে কোনো খাবার বা পানি যায়নি তাই ইফতার শুরু করার সময় খুব বেশি তাড়াহুড়ো করে খাওয়া উচিত নয়। একটু সময় নিয়ে ধীরে ধীরে খাওয়া উচিত। প্রথমে, দু’তিনটি খেজুর খেয়ে পানি পান করা উচিত। এরপরে কিছু সময়, আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ভারি খাবার খাওয়া উচিৎ।
কারণ মস্তিষ্কে খাদ্য সংবেদন পৌঁছাতে একটু সময় লাগে। নির্ধারিত সময়ের আগেই যদি খাওয়া শুরু করা হয় তবে অধিক ভোজনের সম্ভাবনা বেড়ে যায় যা ওজন বাড়ার জন্য দায়ী।
খেজুর মিষ্টি ফল। তাই দ্রুতই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়াও এটি ডাইজেস্টিভ এনজাইম বিতরণকারী হিসেবে কাজ করে যা খাবার হজমে সাহায্য করে।
ইফতারিতে পানি জাতীয় খাবার যেমন ফলের রস, শরবত, স্যুপ ইত্যাদি খাওয়া উচিত। এর ফলে সারাদিনের পানির ঘাটতি কমে আসে। তাই বলে একবারে বেশি পানি পান করা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ইফতারের পর থেকে খানিকক্ষণ পর পর অল্প অল্প করে পানি পান করা উচিত। কিন্তু কোনোভাবেই কৃত্রিম রং মেশানো জুস বা কোমল পানীয় খাওয়া ঠিক নয়।
ইফতারিতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে চাইলে অবশ্যই তেল সমৃদ্ধ ও ভাজাপোড়া-জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় খাবারও না খাওয়াই ভালো।
এছাড়া অতিরিক্ত চা বা কফি এবং কোমল পানীয় পান করা থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ অতিরিক্ত চা ও কফি শরীরের পানি শূন্যতার সৃষ্টি করে।
এখন আমের সময়। তাই ম্যাংগোশেইক, ম্যাংগো পুডিং, কাস্টাড ইত্যাদি খেতে পারেন। তবে বোতলজাত বিভিন্ন ধরনের লাল পানীয় খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য একদম ঠিক না।
ইফতারে পেট ঠান্ডা থাকে এমন খাবার যেমন দুধচিড়া বা দই-চিড়া অথবা মুড়ি খাওয়া ভালো। এগুলো সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যকর।
ইফতারের ভারী খাবারের ব্যাপারে মনে রাখবেন, এই সময় যত কম তৈলাক্ত আর লবণাক্ত খাবার খাওয়া যায় ততই ভালো। অনেকে ইফতারে তেহেরি, বিরিয়ানি ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন। তবে এই ধরনের খাবার কোনোভাবেই ইফতারিতে খাওয়া উচিত না। কারণ এইগুলো পেট গরম করে, ফলে পেটের নানার অসুখ দেখা যায়।
যাদের অতিরিক্ত ওজন তারা ইফতারে জুস, লাচ্ছি, বোরহানি ইত্যাদি তরল খাবার খান। আর স্যুপ, টক-মিষ্টি দই, চিঁড়া, মুড়ি, ফ্রুটসালাদ ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত। তাদের জন্য তো ভাজাপোড়া বলা যায় একদমই বাদ।
অনেকে আছেন যারা ইফতারে ভাত, রুটি খেতে পছন্দ করেন। এতেও কোনো সমস্যা নেই। তবে অনেক না খেয়ে পরিমাণ মতো খান। গুরুপাক বা অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
ইফতার ও সেহেরিতে আঁশজাতীয় ফল খেতে হবে। কারণ এই ধরনের ফল অনেক বেশি সময় ধরে পানি ধরে রাখতে পারে। ফলমূল ও সবজি শরীরকে ‘ডিটক্সিফাইন’ হতে সাহায্য করে। ফলে শরীর সুস্থ থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২২:০৫ ৬৩২ বার পঠিত